
প্রতিনিয়ত চরফ্যাশন পৌরশহরের ফ্যাশন স্কয়ারে চানাচুর বিক্রি করছেন কলেজ ছাত্র ফজলে রাব্বি। পড়ালেখার পাশাপাশি সংসারের খরচ জোগাতে তার এই পন্থা। এক সময়ে তার বাবার আয়-রোজগারে চলছিল তাদের সংসার। এখন বৃদ্ধ হয়ে গেছে। ইনকাম করতে পারছেনা। তার বাবার বয়স যতই বাড়ছে ততই রোগাক্রান্ত হচ্ছে।
এদিকে তার মাও সব সময় অসুস্থ থাকে। চানাচুর বিক্রি করে অসুস্থ বৃদ্ধ বাবা-মায়ের ভরণপোষণ ও নিজের পড়ালেখার খরচ চালাচ্ছেন ফজলে রাব্বি। ফজলে রাব্বি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র এবং হারাজীগঘঞ্জ ২নং ওয়ার্ডের রফিজল ইসলামের ছেলে।
ফজলে রাব্বি জানান, তার বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে অভাবের সংসারে সংগ্রাম করেই বাঁচতে হচ্ছে। তারা চার ভাই ও তিন বোন। তিন ভাই বিয়ে করে তাদের স্ত্রী সন্তান নিয়ে অন্যথায় বসবাস করেন। বৃদ্ধ বা-মার খোঁজ খবর রাখেন না কেউ। তারা মা-বাবাকে ছেড়ে চলে গেলেও তাদের ভরণপোষণ চালিয়ে যাচ্ছেন ফজলে রাব্বি। বহু সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে চলছে তার জীবন। পরিবারের আর্থিক সংকট। অল্প বয়স থেকেই সংসারে হাল ধরেছে এবং পাশাপাশি পড়ালেখাও প্রতিনিয়ত চালিয়ে গেছেন। বর্তমান সে অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম কলেজে একাদশ শ্রেণীতে লেখাপড়া করছে।
ফজলে রাব্বি আরো জানান, সংসার ও নিজের পড়ালেখার খরচ জোগাতে প্রতিনিয়ত বের হয়ে যান রোজগারের সন্ধানে। চানাচুর বিক্রি করে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা উপার্জন করেন। অসুস্থ মা-বাবার ঔষধ কিনে অবশিষ্ট যা থাকে তা দিয়ে কোনোরকম সংসারের খরচ ও নিজের পড়ালেখার খরচ চলে। সে যেন নিয়মিত পড়ালেখা করতে পারে তাই সরকারের কাছে সহযোগিতা চাচ্ছেন।
ফজলে রাব্বির কাছ থেকে চানাচুর ক্রেতা ইসরাফিল জানান, এটা নিশ্চয় ভালো উদ্যোগ। পড়ালেখার পাশাপাশি কর্ম করছে। তার এই আয় দিয়ে মা-বাবার চিকিৎসার খরচ বহন করে তার নিজের পড়ালেখার খরচ চালাচ্ছেন। সমাজের প্রতিটি মানুষের উচিত এদের মতো অসহায় যারা রয়েছে তাদের পাশে এসে দাঁড়ানো।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ মামুন হোসেন জানান, ফজলে রাব্বি যদি পড়ালেখা করে তাহলে শিক্ষা ভাতার আওতায় আনা যাবে। এছাড়াও তার বাবার ৬৫ এবং মা’র ৬২ বছর বয়স হয়ে থাকে তাহলে তাদেরকেও বয়স্ক ভাতা প্রদান করা যাবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর