
ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার বাদেডিহী গ্রামে এক নারকীয় ঘটনার উদ্ভব হয়েছে। যৌতুকলোভী শ্বশুরবাড়ির অত্যাচারের শিকার হয়েছেন তানিয়া খাতুন নামের এক গৃহবধূ। অভিযোগ অনুসারে, তাকে শারীরিক নির্যাতনের পর পায়ে শিকল বেঁধে তালাবদ্ধ ঘরে আটক রাখা হয়।
গত ৬ জানুয়ারি সকালে তানিয়ার স্বামী সোহেল রানা, শাশুড়ি মাহমুদা বেগম ও ননদ রুমি খাতুন মিলে তাকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করে এবং পায়ে শিকল দিয়ে আবদ্ধ করে রাখে। বিষয়টি জানাজানি হলে ৭ জানুয়ারি তানিয়ার পিতা রিপন গাজি শ্বশুরবাড়িতে উপস্থিত হয়ে মেয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তাকেও লাঞ্ছিত করা হয় এবং ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত করা হয়।
খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তানিয়া ও তার আহত পিতাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে স্থানান্তর করে। এ ঘটনায় তানিয়ার পিতা রিপন গাজি বাদী হয়ে স্বামী সোহেল রানা, শাশুড়ি মাহমুদা বেগম এবং ননদ রুমি খাতুনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ তৎক্ষণাৎ অভিযান চালিয়ে শাশুড়ি মাহমুদা বেগম ও ননদ রুমি খাতুনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে মামলার প্রধান আসামি সোহেল রানা এখনও পলাতক রয়েছেন।
তানিয়ার পিতা রিপন গাজি জানান, বিবাহের পর থেকেই জামাই সোহেল রানা মেয়ের উপর যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। পারিবারিক শোভনতার স্বার্থে তিনি কয়েক দফায় এক লাখ ত্রিশ হাজার টাকা প্রদান করলেও তাদের অত্যাচার থামেনি। সর্বশেষ টাকার দাবিতে মেয়েকে শিকলবন্দি করে এমন বর্বরোচিত আচরণ করা হয়।
গৃহবধূ তানিয়া খাতুনের দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে, যাদের একজন পাঁচ বছর বয়সী এবং অপরজন মাত্র তিন মাসের। এই ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে।
ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, "গুরুতর অপরাধের জন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পলাতক আসামিকে ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।"
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর