
যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) প্রকাশিত “এশিয়া ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং ২০২৫” এবং নেদারল্যান্ডভিত্তিক "এলসেভিয়ার র্যাঙ্কিং ২০২৫" -এ বাংলাদেশের সেরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পেয়েছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি)।
২৩ এপ্রিল ২০২৫ এ টাইমস হায়ার এডুকেশন এবং ৬ জানুয়ারি ২০২৫ এ এলসেভিয়ার র্যাঙ্কিংয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।
এর আগে, ৯ অক্টোবর ২০২৪ এ প্রকাশিত 'ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং ২০২৫'-এও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে যবিপ্রবি দেশসেরা স্থান অর্জন করে। উল্লেখ্য, এলসেভিয়ার র্যাঙ্কিংয়ে ২০২২ সাল থেকে টানা চতুর্থবারের মতো শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে যবিপ্রবি।
টাইমস হায়ার এডুকেশন র্যাঙ্কিংয়ে এশিয়ার মধ্যে ৪০১ থেকে ৫০০ অবস্থানের মধ্যে বাংলাদেশের ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে।
এর মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে একমাত্র যবিপ্রবি রয়েছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় হলো—বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। তবে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ৩০১ থেকে ৩৫০ অবস্থানে যৌথভাবে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
টাইমস হায়ার তালিকায় ৩৫১-৪০০ অবস্থানে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়। এগুলো হলো—গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। ২০২৫ সালের এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয় তালিকায় বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে মোট ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যৌথভাবে তৃতীয় স্থানে রয়েছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি)।
টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) র্যাংকিংয়ের বিষয়ে যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, "টাইমস হায়ার র্যাংকিংয়ে যবিপ্রবির অর্জিত মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গর্বের বিষয়। এ অর্জন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, গবেষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একসাথে পরিশ্রম এবং ত্যাগের ফলস্বরূপ এসেছে। তাদের সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
আমি আশা করি, ভবিষ্যতেও এই ধারা বজায় থাকবে। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্ব র্যাংকিংয়ে আরও উচ্চস্থানে অবস্থান করা। গবেষণার মান বৃদ্ধি এবং শিক্ষার্থীদের গবেষণায় আগ্রহী করার জন্য ইতোমধ্যে শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরও গবেষণা বৃত্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই লক্ষ্য অর্জনে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।"
টাইমস হায়ার এডুকেশন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাংকিং বিভিন্ন পারফরম্যান্স সূচক ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠদান, গবেষণার পরিবেশ, গুণগত গবেষণা, শিল্পক্ষেত্রে সংযুক্তি এবং আন্তর্জাতিক সম্ভাবনার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মূল্যায়ন করে।
এদিকে, বিশ্বের প্রথম সারির চিকিৎসা ও বিজ্ঞানবিষয়ক প্রকাশনা সংস্থা এলসেভিয়ার কর্তৃক স্কোপাস ডাটাবেজের সর্বশেষ র্যাংকিংয়ে দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শীর্ষ স্থান অর্জন করেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি)।
এ তালিকায় দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) এবং সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)।
৫ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে নেদারল্যান্ডভিত্তিক এলসেভিয়ারকে উদ্ধৃত করে সাইন্টিফিক বাংলাদেশ নামে একটি ওয়েবসাইটে এই তালিকা প্রকাশিত হয়। এলসেভিয়ার তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বের সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা প্রকাশ করে।
উল্লিখিত তালিকায় বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে নবম স্থানে রয়েছে যবিপ্রবি। ২০২৪ সালে, ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যবিপ্রবির প্রকাশিত মোট গবেষণাপত্রের সংখ্যা প্রায় ৪৫০টি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা নোবিপ্রবির প্রকাশিত গবেষণাপত্রের সংখ্যা প্রায় ৪৫০টি এবং তৃতীয় স্থানে থাকা শাবিপ্রবি এর ৪০০টি গবেষণাপত্র রয়েছে।
এছাড়া, এলসেভিয়ার র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম স্থানে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত গবেষণাপত্রের সংখ্যা প্রায় ১৫০০টি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রায় ৯০০টি এবং তৃতীয় স্থানে থাকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৭০০টি গবেষণাপত্র রয়েছে।
এ র্যাংকিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষাদান (টিচিং), গবেষণা (রিসার্চ), গবেষণা-উদ্ধৃতি (সাইটেশন), আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি (ইন্টারন্যাশনাল আউটলুক) এবং শিল্পের সঙ্গে জ্ঞানের বিনিময় (ইন্ডাস্ট্রি ইনকাম) পর্যালোচনার ভিত্তিতে স্থান নির্ধারণ করা হয়।
এলসেভিয়ার প্রতিবছর প্রায় দুই হাজারের বেশি জার্নাল প্রকাশ করে, যেখানে নিবন্ধের সংখ্যা আড়াই লাখেরও বেশি এবং তাদের আর্কাইভে ৭ লাখেরও প্রকাশনা রয়েছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর