
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিছু শর্তসাপেক্ষে নির্বাচনের জন্য নতুন যে সময় দিয়েছে, তা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একদিকে যেমন আশাবাদের সৃষ্টি করেছে, তেমনি জন্ম দিয়েছে নানা প্রশ্নের।
বিএনপিসহ বেশকিছু দল আগামী বছর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে সম্ভব্য নির্বাচনের সময়কে স্বাগত জানালেও কেবলমাত্র একটি দলের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছিল বিএনপি। নির্বাচন নিয়ে কোনো রোডম্যাপ না দেওয়ায় তারা নিয়মিত অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনাও করছিল।
সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দেন, নির্বাচন আগামী বছরের এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হবে। এরপরই ডিসেম্বরের নির্বাচন আয়োজনের দাবি আরও জোরালো করে বিএনপি।
তবে, ১৩ জুন লন্ডনে ড. ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে হওয়া বৈঠক ও তার ফলাফল এখন দুইপক্ষের মধ্যে সম্পর্কের বরফ গলার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
দলীয় অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলোর মতে, এই পরিবর্তিত পরিস্থিতি আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক শক্তির পুনর্গঠনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
এদিকে দেশের বেশিরভাগ মানুষই একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে নিজেদের মতামত দিচ্ছেন। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা সরকার আওয়ামী লীগের আমলে তারা ভোট দিতে পারেনি—এমনটাই অভিযোগ ভোটারদের।
ব্যাবসায়ী জসিম বলেন, "আমার নানা ভোট দিতে গিয়ে দেখেন, তার ভোট আগেই হয়ে গেছে। পরে আমার নানা সেই কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করে তার বউ কি ভোট দিয়েছে কিনা। সেই কর্মকর্তা চেক দিয়ে দেখে তার ভোট হয়ে গেছে।—যদিও উনি মারা গেছেন ১০ বছর আগে!"
আরেকজন জানান, "বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তাদের শাসন আমরা দেখেছি। কিন্তু জামায়াত কখনো ক্ষমতায় আসেনি। তাই এবার জামায়াতকে একবার সুযোগ দেওয়া উচিত।"
এছাড়া কেউ কেউ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েও বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। একজন বলেন, "আওয়ামী লীগের ওপর রাগ আছে সমস্যা নাই, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বাড়িটা পুড়িয়ে দেয়া ঠিক হয়নি। উনার স্মৃতিটা নষ্ট করা উচিত হয়নি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আল মাসুদ হাসানুজ্জামান বলেন,
'আগামী দিনে রাজনীতি কেন্দ্রীভূত হবে নির্বাচনকে ঘিরে। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের হিসাব-নিকাশ করবে, কৌশলগত বিবৃতি দেবে এবং শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারে নামবে।' তিনি বলেন, 'যদি সব দল একমত হতো, তাহলে কোনো দ্বন্দ্ব থাকত না। কিন্তু রাজনীতি ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মতপার্থক্য অনিবার্য এবং সেটা স্বীকার করে নেওয়াই যুক্তিসঙ্গত।'
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর
জাতীয় এর সর্বশেষ খবর