• ঢাকা
  • ঢাকা, মঙ্গলবার, ০৬ মে, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১ মিনিট পূর্বে
শাহীন মাহমুদ রাসেল
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৬ মে, ২০২৫, ১০:১১ দুপুর

ক্যাম্পে ঠাঁই নেই, কক্সবাজারে নতুন করে আরও ১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা

ফাইল ফটো

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাত, সহিংসতা ও চরম খাদ্যসংকটের ফলে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঢল থামছে না। গত দেড় বছরে নতুন করে এক লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নিয়েছেন। ফলে বর্তমানে ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় সংকট চরমে পৌঁছেছে। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর বসবাসের ঘর বরাদ্দ চেয়ে বাংলাদেশ সরকারকে চিঠি দিলেও এখনো তার কোনো সাড়া মেলেনি।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের (আরআরআরসি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত সময়কালে এক লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন এবং তাদের নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে গত বছরের জুন ও জুলাই মাসে সর্বোচ্চ অনুপ্রবেশ ঘটে। এমন পরিস্থিতিতে ক্যাম্পে স্থান সংকুলান না হওয়ায় নতুন রোহিঙ্গারা গাদাগাদি করে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।

বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১৩ লাখের বেশি নিবন্ধিত রোহিঙ্গা বসবাস করছেন। নতুন করে আসা ১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা এখনও এই পরিসংখ্যানে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মাত্র কয়েক মাসেই আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিলেন। কিন্তু বিগত আট বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।

নতুন রোহিঙ্গাদের ভাষ্যমতে, রাখাইনে আরাকান আর্মি ও আরসা (আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি)-র মধ্যে চলমান সংঘর্ষ, নিপীড়ন, অপহরণ, হত্যা ও জোরপূর্বক সশস্ত্র দলে ভর্তির চাপ থেকে বাঁচতেই তারা পালিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। এর মধ্যে বুথেডং অঞ্চলে রোহিঙ্গা যুবকদের ব্যারাক নির্মাণসহ নানা শ্রমে বাধ্য করছে আরাকান আর্মি। খাদ্য ও ওষুধের সংকট চরমে উঠেছে। বাংলাদেশে আসার সময়ও মাথাপিছু পাঁচ হাজার কিয়াত ঘুষ দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের।

সম্প্রতি শালবন আশ্রয়শিবিরে ঠাঁই পাওয়া আবদুল গফুর জানান, ‘রাখাইনে আরসাকে সহায়তার অভিযোগে আরাকান আর্মি আমাদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে। ঘরবাড়ি দখল, ধানচাল লুট, ও জোরপূর্বক শ্রমে নিয়োজিত করছে তারা।’ তিনি জানান, খাদ্যের সংকটে থাকা পরিবারগুলোর পুরুষ সদস্যদের জোর করে কাজ করানো হচ্ছে।

শুধু গত সপ্তাহেই ১ হাজার ৪৪৮টি রোহিঙ্গা পরিবার বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, সঙ্গে আরও প্রায় ছয় হাজার ব্যক্তি পৃথকভাবে এসেছে। বর্তমানে নতুন আসাদের সংখ্যা প্রায় ২৯ হাজার ৬০০ পরিবারের সদস্য।

রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, ‘২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর মংডু শহরের দখল নেয় আরাকান আর্মি। এরপর থেকে তারা আরসার উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গাদের টার্গেট করছে। নির্যাতন, নিখোঁজ হওয়া, হত্যা- এসব যেন নিত্যদিনের ঘটনা। এমন পরিস্থিতিতে অনুপ্রবেশ বাড়ছেই। আরাকান আর্মির এই আচরণ বদল না হলে প্রত্যাবাসন তো দূরের কথা, অনুপ্রবেশ ঠেকানোও সম্ভব নয়।’

এই পরিস্থিতিতে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণেও দেখা দিয়েছে জটিলতা। টেকনাফ ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ড সতর্ক রয়েছে। সীমান্তে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।’ বিজিবি টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, ‘রাতে দুর্গম সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ বেশি হচ্ছে। আমরা কয়েকটি পয়েন্টে অনুপ্রবেশকারীদের আটকে আবার ফেরত পাঠিয়েছি।’

এদিকে, মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক কনসাল জেনারেল ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর এমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘মিয়ানমার সরকার এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠী উভয়ের নিপীড়নে রোহিঙ্গারা দিশেহারা। সরকার যেখানে প্রত্যাবাসনের আশা দেখাচ্ছে, বাস্তবে তার কোনও মিল নেই। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বাংলাদেশ সরকারকে বাস্তবসম্মত ও টেকসই সমাধানের পথে অগ্রসর হতে হবে।’

আরআরআরসির অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান গনমাধমে বলেন, ‘নতুন রোহিঙ্গাদের জন্য ক্যাম্পে ঘর বরাদ্দ চেয়ে জাতিসংঘ থেকে চিঠি এলেও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তাতে সাড়া দেওয়া হয়নি। কারণ, নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের বসতি গড়ার আর কোনো সুযোগ অবশিষ্ট নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পুরোনো ক্যাম্পগুলোতেই নতুনদের স্থাপনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে, তবে সেটি স্থায়ী সমাধান নয়। অনুপ্রবেশ অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াও জটিল হয়ে উঠবে।’

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com