
নাটোরের প্রবীণ সাংবাদিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও একু শে টেলিভিশন ও দৈনিক সম কালের নাটোর প্রতিনিধি খন্দকার নবীউর রহমান পিপলু ইন্তেকাল করেছেন।
মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার এএমজেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ব্লাড ক্যান্সার ও বোনম্যারোজনিত রোগে ভুগছিলেন।
নবীউর রহমান পিপলু স্ত্রী রেখে গেছেন, তবে তার কোনো সন্তান নেই।
১৯৫৭ সালের ১০ জানুয়ারি বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পিতার চাকরির সুবাদে পরিবারের সঙ্গে নাটোরে আসেন এবং এখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
মুক্তিযুদ্ধে তিনি বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে ১৯৭১ সালে অংশগ্রহণ করেন। নাটোরের ট্রেজারি থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা কলেজের ছাত্রাবাসে প্রশিক্ষণ নেন। পরে ভারতে গিয়ে গেরিলা ও অ্যাডভান্স প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ৭ নম্বর সেক্টরের তুফানি ব্যাটালিয়নের সদস্য হিসেবে হিলি, পাঁচবিবি, জয়পুরহাট, গোবিন্দগঞ্জ ও নওগাঁ এলাকায় গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হন পিপলু। একু শে টেলিভিশন, দৈনিক সম কাল এবং রাজশাহীর অনলাইন সংবাদমাধ্যম পদ্মাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর নাটোর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি নাটোর টিভি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন।
তার সাংবাদিকতা জীবনে তিনি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা তুলে ধরতে সক্রিয় ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক হিসেবে পেয়েছেন বিভিন্ন সম্মাননা।
তিনি ছিলেন ১১ ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয় এবং তার অধিকাংশ ভাইবোন এখনও জীবিত। তার বাবা রশিদুর রহমান মুক্তিযুদ্ধকালে ভারতে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা করলেও আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় তার নাম ওঠেনি, যা নবীউর রহমানের জন্য এক গভীর বেদনার বিষয় ছিল।
খন্দকার নবীউর রহমান পিপলু ছিলেন একজন সাহসী মুক্তিযোদ্ধা, নিবেদিতপ্রাণ সাংবাদিক ও সমাজসেবক। তার মৃত্যুতে জাতি হারালো এক সংগ্রামী, দেশপ্রেমিক ও নির্ভীক কণ্ঠস্বর।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর