
বান্দরবানের লামা উপজেলায় বালু নিলাম কার্যক্রমকে ঘিরে সক্রিয় হয়ে উঠেছে আন্তঃজেলা বালু পাচারকারী সিন্ডিকেট। বিভিন্ন মহলের অভিযোগ, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা ও জব্দ করা বালুর নিলামই হয়ে উঠছে অবৈধ বালু বৈধ করার সুযোগ। এ অবস্থায় লামায় সকল ধরনের বালু নিলাম বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি।
জেলা প্রশাসক বলেন, “বালু নিলাম কার্যক্রম অবৈধ উত্তোলনের সহায়ক হয়ে উঠেছে—বিষয়টি আগে জানা ছিল না। এখন থেকে লামায় আর কোনো বালু নিলাম কার্যক্রম পরিচালিত হবে না।" তিনি আরও জানান, এখনো পর্যন্ত লামা উপজেলায় কোনো বালু মহাল অনুমোদন দেওয়া হয়নি।
এদিকে, বুধবার (৭ মে) লামা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সরই ইউনিয়নের পাঁচটি পয়েন্ট থেকে জব্দকৃত প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার ঘনফুট বালুর উন্মুক্ত নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। এতে করে বালু সিন্ডিকেট আরও সক্রিয় হয়ে ওঠার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
লামা পরিবেশ রক্ষা পরিষদের সভাপতি ও সাংবাদিক রুহুল আমিন বলেন, “গত ৮ মার্চ ২০২৫, লামার সরই আমতলী ও জোড়মনিপাড়া এলাকায় এক মাসের জন্য ২ লাখ ঘনফুট বালুর নিলাম দেওয়া হয়। এই নিলামের সুযোগ নিয়ে বালু সিন্ডিকেট অন্তত ২০টি স্পট থেকে প্রায় ২০ লাখ ঘনফুট বালু পাচার করেছে। এতে সরকার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।”
সরই ইউনিয়নের পুলাং পাড়ার বাসিন্দা রিয়াজুল মোস্তফা ও আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করেন, অবৈধভাবে উত্তোলিত বালু জব্দ ও নিলামের প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয়ভাবে কয়েকটি দালাল চক্র গড়ে উঠেছে। এসব চক্র উপজেলা প্রশাসন ও লামা থানার নাম ব্যবহার করে নিয়মিত চাঁদা আদায় করছে বলে দাবি তাদের।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই লামা উপজেলায় বালু পাচার রোধে কোর কমিটির মাধ্যমে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, সিন্ডিকেট এই নির্দেশনা মোটেও তোয়াক্কা করছে না। বর্তমানে ফাঁসিয়াখালী ও সরই ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় ১ কোটি ঘনফুট বালু অবৈধভাবে মজুদ রয়েছে বলেও দাবি উঠেছে।
সচেতন মহল আরও অভিযোগ করেছেন, উপজেলা সদরের কিছু সরকারি দপ্তরের চিহ্নিত কর্মচারী পাচারকারী সিন্ডিকেটের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন। তারা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়মিত অর্থ লেনদেনে জড়াচ্ছেন এবং নিয়মিতভাবে পাচারকারীদের বাড়িতেও যাতায়াত করছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর