
ভারত এবং পাকিস্তানকে সতর্ক করে দিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার বলেছে, দুই দেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সীমান্তে কামানের গোলা বিনিময়ের পর উত্তেজনা বাড়ানো ‘‘এই অঞ্চলের স্বার্থের’’ পরিপন্থী।
বুধবার পাকিস্তানে ভারতের হামলার পর আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া বিবৃতিতে আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, উভয়পক্ষকে সংলাপ ও কূটনীতির মাধ্যমে তাদের সমস্যার সমাধানের আহ্বান জানায় কাবুল। একই সঙ্গে এই সংঘাতের অবসানে দিল্লি এবং ইসলামাবাদকে সংযমের আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।
ইসলামাবাদ বলেছে, বুধবার পাকিস্তানে ভারতের হামলায় ২৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আর নয়াদিল্লি বলেছে, পাকিস্তানের ছোড়া গোলার আঘাতে কমপক্ষে ১২ ভারতীয় নিহত হয়েছেন।
আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের সঙ্গে প্রতিবেশী পাকিস্তানের সম্পর্কে সম্প্রতি ব্যাপক অবনতি ঘটেছে। নিরাপত্তা উদ্বেগের কথা জানিয়ে গত এপ্রিলের শুরুর দিকে কয়েক হাজার আফগান নাগরিককে ফেরত পাঠিয়েছে পাকিস্তান।
২০২১ সালে কাবুলের ক্ষমতায় ফিরে আসা তালেবান সরকারকে নয়াদিল্লি স্বীকৃতি না দিলেও তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আফগানিস্তানের বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্পে ভারতের বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে।
জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার দুই সপ্তাহ পর বুধবার মধ্যরাতে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরের অন্তত ৯টি স্থানে হামলা চালিয়েছে ভারতীয় সামরিক বাহিনী। এই হামলায় ভারতীয় সামরিক বাহিনী মাত্র ২৫ মিনিটে অন্তত ২৪ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে পাকিস্তানে। এতে পাকিস্তানে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ভারত।
যদিও পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী বলেছে, ভারতের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। অন্যদিকে, কাশ্মির সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে ভারত-শাসিত কাশ্মিরে অন্তত ১৫ জন নিহত ও ৩০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতীয় অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। তবে ভারতীয় কর্মকর্তারা জম্মু-কাশ্মিরে এখন পর্যন্ত তিনটি ভারতীয় বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন।
হামলা-পাল্টা হামলা নিয়ে উভয় দেশের মাঝে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে বুধবার পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির জরুরি বৈঠকে ভারতের হামলার জবাবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: এএফপি, রয়টার্স।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর