
নেত্রকোণা সদর উপজেলার কাঞ্চনপুর (মোড়লপাড়া) গ্রামে ছেলের খুনি মো. এরশাদ মিয়াকে (৩৬) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার নেত্রকোণা জেলা ও দায়রা জজ মো. হাফিজুর রহমান এ রায় দেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সাততী গ্রামের মতিয়র রহমানের মেয়ে মোছা. আফরোজা আক্তারের সাথে প্রায় ১০ বছর আগে নেত্রকোণা সদর উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের আবদুল জব্বারের ছেলে মো. এরশাদ মিয়ার বিয়ে হয়। এরই মধ্যে তাদের সংসারে দুটি সন্তান হয়। প্রথম সন্তান মো. শাখাওয়াত হোসেন আরাফ, বয়স আট বছর। দ্বিতীয় সন্তান প্রসবের সময় মারা যায়।
বিয়ের পর থেকেই স্বামী এরশাদ মিয়া স্ত্রী আফরোজাকে প্রায় সময়ই নির্যাতন করত। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে প্রায় চার বছর আগে স্বামীর বাড়ি থেকে চলে যান আফরোজা। তিনি পার্শ্ববর্তী কান্দুলিযা গ্রামে মামা লিটনের বাড়িতে থাকতেন। এরশাদ স্ত্রী ও সন্তানের কোন খোঁজ খবর রাখত না। আফরোজা মামার বাড়িতে থেকে সেলাই মেশিনে কাজ করে সন্তান নিয়ে চলতেন। স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর স্বামীকে তালাক দেন আফরোজা।
তালাক দেওয়ায় এরশাদ মিয়া স্ত্রীর প্রতি আরও ক্ষিপ্ত হন। পরে ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি কান্দুলিয়া গ্রামে যান এবং একমাত্র ছেলে সাখাওয়াত হোসেনকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন এরশাদ। খবর পেয়ে পুলিশ এরশাদ মিয়াকে আটক করে।
এ ঘটনায় আফরোজা আক্তার ওইদিনই স্বামী এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে নেত্রকোণা থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে একই বছরের ১৫ এপ্রিল আসামি এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নেত্রকোণা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. হাফিজুর রহমান গতকাল বুধবার এ রায় প্রদান করেন। সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন বিজ্ঞ পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আবুল হাসেম, আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট পূরবী কুন্ড।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর