• ঢাকা
  • ঢাকা, বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৫০ সেকেন্ড পূর্বে
প্রচ্ছদ / জাতীয় / বিস্তারিত
মোহাম্মদ ফয়সাল
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১৪ মে, ২০২৫, ০৭:৩৯ বিকাল

পৃথিবীর ভবিষ্যৎ শিক্ষার্থীদের হাতে: ড. ইউনূস

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

পৃথিবীর ভবিষ্যৎ শিক্ষার্থীদের হাতে এমন মন্তব্য করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, গবেষণার মাধ্যমে পুরো বিশ্বকে নিজেদের আয়ত্তের মধ্যে রাখতে হবে। পৃথিবীর ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা ছাত্র সমাজই ঠিক করবে।

বুধবার (১৪ মে) বিকেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

নিজের দীর্ঘদিনের কর্মস্থল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে অতীতের স্মৃতিচারণ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ১৯৭২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করি। এরপর ৭৪ সালে দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। সারাদেশে তখন হাহাকার চলছে। সেই দুর্ভিক্ষ দেখে মানুষের জন্য কিছু করার চিন্তা আসে। এই চিন্তা থেকে ক্ষুদ্র ঋণ চালু করি। নোবেল পুরস্কার পাবো তা কখনও মনে আসেনি।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, জোবরা গ্রামের মহিলাদের কাছ থেকে নতুন অর্থনীতি শিখেছিলাম। যা আমার জন্য নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। আজ পর্যন্ত যা করে যাচ্ছি, তা জোবরা থেকে যা শিখেছি তার বহিঃপ্রকাশ। আজ অর্থনীতি যা পড়াচ্ছি, সেটা ব্যবসার অর্থনীতি, মানুষের অর্থনীতি না। আমাদের মানুষের অর্থনীতি গড়তে হবে। আমাদের অর্থনীতি যদি শুরু করতে হয়, মানুষকে দিয়ে শুরু করতে হবে, ব্যবসাকে দিয়ে নয়। অথচ আমরা ব্যবসাকেন্দ্রিক সভ্যতা গড়ে তুললাম, এটা আত্মঘাতী সভ্যতা, এটা টিকবে না।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ওই যে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি লেখাপড়া শুরু করলাম, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ই আমাকে বলল- এই বিদ্যায় পৃথিবী ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে, এর থেকে রেহাই পাবার কোনো উপায় নেই। তখন আরও বড় আকারের জিনিসের মধ্যে ঢুকলাম। বললাম আমাদের নতুন সভ্যতা গড়তে হবে। আমার সহকর্মী যারা আছেন, অর্থনীতির পাঠদান করেন, লেখালেখি করেন তারা তো আগেই আমাকে ত্যাজ্য করেছেন, তারা এটা নিয়ে কথা বললে একেবারেই শেষ করে দেবেন কথাবার্তা।

ড. ইউনূস বলেন, কিন্তু আমার মাথায় সেটা রয়ে গেল যে আমাদের আবার নতুন সূত্রে যাত্রা শুরু করতে হবে, যে অর্থনীতির ভিত্তি হবে মানুষ, তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, কীভাবে নিজেকে আবিষ্কার করার প্রবণতা এবং যেদিকে তাকে ছুটিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেখান থেকে বের করে আনা। এগুলো সবকিছুর বীজ বপন হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে, পাশের নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে (জোবরা)। এজন্য আমি চবি ও জোবরার কাছে কৃতজ্ঞ। এটা করে যে কোনোদিন একটা নোবেল পুরস্কার পাওয়া যাবে, কখনও মনে আসেনি। তবে লোকজন বলাবলি করেছিল মাঝে মাঝে।

দুইটি নোবেল পুরস্কার পাবার জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গর্ববোধ করতে পারে উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাক্তন শিক্ষক ড. ইউনূস বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যখন নিজের পরিচয় দেয়, হয়ত নোবেলের জন্য গৌরববোধ করে। কিন্তু চবির গৌরববোধ করার কারণ দুইটা আছে। পুরো কর্মসূচি, যার জন্য নোবেল পুরস্কার, এর গোড়াপত্তন হয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে।

একটি তো আমি ব্যক্তিগতভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছি। তারপর যে গ্রামীণ ব্যাংক সৃষ্টি হল, এই ব্যাংকের গোড়াতেও চবি। গ্রামীণ ব্যাংকের আইনে এটা পরিষ্কার লেখা আছে যে, এটা কোথা থেকে আসল? ব্যাংকের জন্ম হয়েছে চবিতে অর্থনীতি বিভাগে, এটা স্পষ্ট উল্লেখ আছে। এই ব্যাংকও নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান। কাজেই দুটি নোবেল পুরস্কারের বিষয় চবি তার ছাত্রছাত্রীদের এর ইতিহাস জানাতে পারে। তাহলে ছাত্রছাত্রীরা ঠিক করবে যে তারা কী ধরনের ভবিষ্যৎ গড়তে চায়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ১৯৭২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করি। ’৭৪ সালে দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। সারা দেশে তখন হাহাকার চলছে। সেই দুর্ভিক্ষ দেখে মানুষের জন্য কিছু করার চিন্তা আসে। সেই চিন্তা থেকে ক্ষুদ্রঋণ চালু করি।

গবেষকদের উদ্দেশে ড. ইউনূস বলেন, মনে রাখতে হবে, আমরা শুধু খণ্ডিত বিষয়ে গবেষণার জন্য নিয়োজিত নই, পুরো বিশ্বকে মনের মতো করে সাজানোর জন্য, বানানোর জন্য আমাদের নিয়োজিত হতে হবে। আমাদের যদি সেই লক্ষ্য না থাকে, তাহলে তা গন্তব্যবিহীন গবেষণা হবে।

তিনি বলেন, পৃথিবীর ভবিষ্যৎ আমাদের প্রত্যেকের হাতে। আমি যেভাবে বলেছি সেভাবে গড়তে হবে এমন কোনো কথা নেই। আমি আমার কথা বলে যাচ্ছি, অন্যরা অন্যদের কথা বলবে। কিন্তু নিজের মনের একটা স্বপ্ন থাকতে হবে যে, আমরা কী ধরনের বিশ্ব চাই, কী ধরনের সমাজ চাই, কী ধরনের সংসার চাই, কী ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা চাই, মনের মাধুরী মিশিয়ে এগুলো আমাকেই বের করে নিতে হবে।

সমাবর্তীদের উদ্দেশ্যে নোবেলজয়ী ইউনূস বলেন, সমাবর্তন একজন মানুষের জীবনে একটি মস্তবড় ঘটনা। সনদ নেবে, ছবিটি সংরক্ষণ করবে, সেটা সবাইকে দেখায়, সেই বিশেষ দিনটি আজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়টা কত তাড়াতাড়ি চলে যায়, কেটে যায় বোঝা যায় না। যখন শেষ হয়ে যায়, তখন মনে বড় কষ্ট লাগে। জীবনের একটা বড় অধ্যায় শেষ হল, নতুন অধ্যায়ের শুরু।

এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি দেয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনন্য অবদানের জন্য নোবেল জয়ী অধ্যাপককে এই ডিগ্রি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে ডি লিট ডিগ্রি তুলে দেন উপাচার্য ড. ইয়াহ্ইয়া আখতার।

এ সময় চবি উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান এবং উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মো. কামাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com