
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় চৌরঙ্গী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম মিলনের বিরুদ্ধে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, উপবৃত্তির প্রলোভন দেখিয়ে তাকে বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে ডেকে নিয়ে অশালীন আচরণ ও কুপ্রস্তাব দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকেল ৩টার দিকে ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলামের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগপত্রে ছাত্রীর মা উল্লেখ করেন, ১২ মে (সোমবার) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইংরেজি ক্লাস চলাকালে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক উম্মত আলী উপবৃত্তির কথা বলে তার মেয়েকে লাইব্রেরিতে ডেকে নেন এবং প্রধান শিক্ষকের কাছে রেখে আসেন।
এরপর প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম মিলন ছাত্রীকে উপবৃত্তি ও মোবাইল ফোন দেওয়ার আশ্বাস দেন। পরে তিনি ছাত্রীর হাত ধরে, মুখে ও হাতে চুম্বন করেন এবং বুকে জড়িয়ে ধরেন। এ সময় তিনি ব্যক্তিগত ও অশালীন প্রশ্ন করেন এবং একটি কৌটায় প্রস্রাব সংগ্রহ করে তা পরদিন বিদ্যালয়ে আনার নির্দেশ দেন। ঘটনার পর ভয়ে ছাত্রীটি বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেয়।
ছাত্রীর মা জানান, বাসায় ফিরে মেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে এবং পুরো ঘটনা খুলে বলে। সে সময় প্রধান শিক্ষক কাউকে কিছু না বলার জন্য হুমকিও দেন। পরে শিক্ষক মোবাইল ফোনে হুমকি দিতে থাকেন এবং স্থানীয় লোকজন পাঠিয়ে আপস-মীমাংসার চাপ সৃষ্টি করেন।
ছাত্রীর চাচা জানান, প্রধান শিক্ষক একাধিকবার ফোন করে হুমকি দিয়েছেন এবং ক্ষমা চেয়েছেন। এসব কথোপকথনের অডিও রেকর্ডও রয়েছে।
ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, "উপবৃত্তির কথা বলে উম্মত স্যার ডেকে নেন। এরপর মিলন স্যার খারাপ আচরণ করেন। ভয় পেয়ে আমি কয়েকদিন ধরে স্কুলে যাইনি। আমি বিচার চাই। শুনেছি, উনি অন্য মেয়েদের সঙ্গেও এমন আচরণ করেছেন।"
অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম মিলন বলেন, "একটি অভিযোগের ভিত্তিতে ছাত্রীটিকে শাসনের জন্য ডাকা হয়েছিল। কোনো খারাপ কিছু করিনি। এটি ষড়যন্ত্রমূলক ও মিথ্যা অভিযোগ।"
তিনি জানান, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে লিখিত অভিযোগের বিষয়ে তিনি জানতে পেরেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর