
যশোর জেলা জজ আদালতের হাজতখানা থেকে হ্যান্ডকাফ ভেঙে পালিয়ে গেছেন হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি জুয়েল খান। রোববার (১৮ মে) দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পালিয়ে যাওয়া জুয়েল খান মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার রামপুর গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর খানের ছেলে।
আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই দিন মামলার ধার্য তারিখ ছিল। সকালে আসামি জুয়েল খান ও হারুন অর রশিদকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে শুনানি শেষে তাদের আবার কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
পরে মহিলা পুলিশ কনস্টেবল সোনালী তাদের হাজতখানায় নেওয়ার সময় নিচ তলার সিঁড়ি এলাকায় পৌঁছালে কৌশলে জুয়েল হাতকড়াসহ দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। কনস্টেবল সোনালী চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন তাকে ধাওয়া করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুয়েল আদালতের সামনের গেট দিয়ে বের হয়ে মসজিদের পাশ দিয়ে দৌঁড়ে খড়কির দিকে চলে যায়।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) নূর-ই-আলম সিদ্দিকী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) আবুল বাসার, কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাতসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা আদালতে উপস্থিত হন এবং তাৎক্ষণিকভাবে একাধিক টিম গঠন করে জুয়েলকে খুঁজতে অভিযান শুরু করেন।
যশোর আদালতের কোর্ট ইন্সপেক্টর রোকসানা খাতুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, "আসামি জুয়েলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে।"
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর মাগুরা থেকে ভাড়ায় নেওয়া ইজিবাইকচালক আল-আমিনকে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বুধোপুর গ্রামে নিয়ে হত্যা করে ইজিবাইক ছিনিয়ে নেয় জুয়েল ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মোস্তাফিজুর রহমান অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে বাঘারপাড়া থানায় মামলা করেন।
২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর র্যাব-৬ খুলনার একটি টিম অভিযান চালিয়ে জুয়েলসহ চার আসামিকে আটক করে এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে তারা। তাদের কাছ থেকে ইজিবাইকের ব্যাটারি, চাকা ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়।
২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হরষিত রায় জুয়েল খান ও হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলাটি বর্তমানে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতে বিচারাধীন।
পালানোর ঘটনায় আদালতপাড়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
আরমান/সাএ
সর্বশেষ খবর