• ঢাকা
  • ঢাকা, সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১ ঘন্টা পূর্বে
আরিফ জাওয়াদ
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১৯ মে, ২০২৫, ০৯:০৮ রাত

ঢাবিতে ‘জুলাই বিপ্লব তৎপরবর্তী দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপত্তা’ শীর্ষক সেমিনার

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘দ্য জুলাই রেভ্যুলেশন অ্যান্ড বিয়ন্ড: রিথিংকিং সিকিউরিটি, সাসটেইনেবলিটি অ্যান্ড পিস ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক বিশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (১৯ মে) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরি অডিটোরিয়াম সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ সেমিনারটি আয়োজন করে।

সেমিনারের মূলবক্তা ছিলেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান। তিনি বাংলাদেশ-ভারতের অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন সমস্যা প্রসঙ্গে বলেন, নদীতে সাড়ে চার হাজার বাঁধ নির্মাণ করেছে ভারত। আমি নিশ্চিত ভারত আমাদের পানি দেবে না। নিতে গেলে যুদ্ধ করতে হবে। জাতিকে যদি মাথা উঁচু করে বাঁচতে হয়, পানিকে আশীর্বাদে রুপান্তর করতে হবে।

‘ইমারত মডেল’ নামের একটি ধারণা প্রসঙ্গে তিনি জানান, নীচু অঞ্চলে বহুতল ভবন নির্মাণ করা যেতে পারে। নিচতলা ফাঁকা রেখে ওপরে বসবাস করতে হবে। বন্যার পানি ব্যবহার করতে হবে। আবাদি জমিতে মাছের ঘেরের মতো করে বন্যার পানি আটকে রাখতে হবে। এটাও বিনিয়োগ। বন্যার পানি দিয়ে মাছ চাষ হবে। এছাড়াও পানি ধরে রেখে সেচের পানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। আমরা ফ্লাড-ট্যুরিজম করতে পারি। যতই ব্যয়বহুল হোক, যদি আমরা সারা দেশকে কানেক্ট করে ফেলতে পারি, তাহলে বাংলাদেশকে আমরা আয়বর্ধক দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।

ভারতের পানি আগ্রাসনের হুমকি জাতির অস্তিত্বের জন্য হুমকি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা হিমালয়ের ড্রেনেজ সিস্টেমের অংশ। অর্থাৎ পানি বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যায়। পানি পলি মাটি আনে। এতে ভূমির ক্ষয় রোধ হয়। পলি জমে সমুদ্রে নতুন ভূমি জেগে উঠছে। কাজেই বন্যা আমাদের জন্য আশীর্বাদ হতে পারে। তবে এখন এটা আমাদের জন্য ধ্বংসের বিষয়। পরিকল্পনা করে এগোলে আমরা শুধু বন্যার হাত থেকে বাঁচবো না, ভবিষ্যতে উন্নত দেশ হয়ে উঠবো।

দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য তিনি গ্রামের রাস্তার ধারে পরিকল্পিতভাবে খেজুর এবং তাল গাছ রোপণের প্রস্তাব করে বলেন, এতে একদিকে বনায়ন হবে ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা পাবে এবং অন্যদিকে দারিদ্র্য বিমোচন হবে।

সেমিনারের সম্মানিত অতিথি বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন বলেন, ভারত ভাবে ওরা আমাদের দেশ স্বাধীন করেছে। তারপর দেশটা আমাদের গিফট করেছে। এগুলো শুনলে মাথায় রক্ত উঠে যায়। আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। জুলাইযে ছাত্ররাসহ আমরা রাস্তায় নামি। ছাত্রদের ভূমিকার জন্য ওদের ধন্যবাদ দেই। তাদের জন্যই আমরা এখন সবার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারি।

মেজর জেনারেল ফজলুর রহমানের আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেমিনারের মূলবক্তার বক্তব্যের তিনটা বিষয় ভাল লেগেছে। প্রথমত উনি বলেছেন বাংলাদেশ ভূরাজনৈতিকভাবে বড় শক্তি, দ্বিতীয়ত আমরা সবাইকে কানেকটিভিটি দিতে পারি এবং তৃতীয়ত যুদ্ধ হলে আমরা অবশ্যই জয়ী হবো। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস যখন সেভেন সিস্টার নিয়ে কথা বলেছেন, তখন খুশি হয়েছি। আমরা ভেবেই নিয়েছিলাম আমরা ভারতের হাতের মুঠোয়। উনি দেখালেন আমরাও ভারতকে হুমকি দিতে পারি। ফজলুর রহমানের পরিকল্পনা চমৎকার। উনি আমাদের পথ প্রদর্শন করেছেন, আমাদের সেই পথে হাঁটতে হবে। অ্যাকাডেমিয়ার সাথে বিষয়গুলো সংযুক্ত করতে পারলে ভাল হয়।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম বলেন, আমরা আমাদের প্রতিবেশী পরিবর্তন করতে পারি না। তবে বাংলাদেশের মানুষ একাই একশ। আমরা যুদ্ধ করতে জানি। আমরা স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি এবং তা রক্ষা করতেও জানি। এই জাতির মনস্তত্ত্ব এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে আমরা সাহসী জাতি থেকে গোলামির জাতিতে পরিণত হচ্ছিলাম। তবে জুলাইয়ে আমরা প্রমাণ করেছি আমরা সাহসী। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক তৈয়েবুর রহমান বলেন, ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধের মাঝখানে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে। এই বয়ান পুরোপুরি ভুল। আমাদের এত মানুষের সাক্রিফাইস কি জলে যাবে? আমরা তাদের এই বয়ানকে মানি না। জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশ নতুন যাত্রা শুরু করেছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মেজবা-উল-আযম সওদাগর বলেন, কোনো রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পানির প্রবাহ বন্ধ করতে পারে না। তবে সম্প্রতি ভারত পাকিস্তানের সাথে এটা করেছে এবং বাংলাদেশের সাথে ঐতিহাসিকভাবে করে আসছে। বাংলাদেশ এতকাল ভেবে এসেছে পানি চুক্তি করতে হবে। তবে মেজর জেনারেল ফজলুর রহমান বিকল্প সমাধান প্রস্তাব করেছেন।

ফারাক্কা চুক্তির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ফারাক্কা চুক্তি শুভঙ্করের ফাঁকি। নদীর পানি ৪০০টি ক্যানেলের মাধ্যমে প্রত্যাহার করে নেয় ভারত। অবশিষ্ট পানির ওপর চুক্তি করা হয়েছে। পানি আগ্রাসনকে অ্যাডাপটেশনের মাধ্যমে মোকাবিলা করতে হবে।

এর আগে শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন সেমিনারটির আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. শরীফুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমি আমার টিচিং ক্যারিয়ারে অনুভব করেছি অ্যাকাডেমিয়ার সাথে বাস্তবের সম্পর্ক দরকার। মেজর জেনারেল ফজলুর রহমানের আইডিয়া তাত্ত্বিক কাঠামোতে রূপান্তরের সুযোগ রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক নাছিমা খাতুনের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তৃতা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক শাহনেওয়াজ খান চন্দনসহ প্রমুখ। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক স ম আলী রেজা উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com