
বাড়ির পাশে তাল গাছে থোকা থোকা তাল দেখে খুব খেতে ইচ্ছে করেছিল নয় বছর বয়সী রাকিব উদ্দিনের। তিন বছরের ইমাদুল হোসেন ও সিফাত উল্লাহ নামের দুই চাচাতো ভাইকে সঙ্গে নিয়ে গাছ থেকে তাল পাড়তে যায় রাকিব। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাছে উঠে যায় রাকিব। কয়েকটা তাল পাড়ার পর খুশিতে আত্মহারা ছিল ওই তিন শিশু।
কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই খুশিতে বিষাদে পরিণত হয় ওই তিন শিশুর। হঠাৎ করেই হাজির হন গাছ মালিক লতিফ মির্জা। তাল পাড়তে দেখে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে রাকিবকে মাটিতে ফেলে মুখে, বুকে ও গলায় পা তুলে দিয়ে মাটির সাথে চেপে ধরে ও লাথি মারতে থাকে গাছ মালিক। শিশুটি (রাকিব) বার বার আকুতি জানালেও মন গলেনি গাছ মালিক লতিফ মির্জার। উলটো তার হাতে থাকা দা দিয়ে কোপানোর চেষ্টা করে সে।
কোনোক্রমে সেখান থেকে রাকিব ও তার দুই চাচাতো ভাই বেঁচে ফেরে। এমনই এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে পাবনার ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগর গ্রামে। গত বুধবার (২১ মে) ঘটনাটি ঘটলেও জানাজানি হয় সোমবার। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে জানতে পারে ওই তিন শিশুর পরিবারও।
এমন অমানবিক ঘটনায় পুরো উপজেলা জুড়ে বইছে নিন্দার ঝড়। এদিকে এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে এলাকা থেকে পালিয়ে গেছেন অভিযুক্ত গোপালনগর গ্রামের কোবাদ মোল্লার ছেলে লতিফ মির্জা। সোমবার রাতে গাছ মালিক লতিফ মির্জার বিরুদ্ধে ফরিদপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অমানবিক নির্যাতনের শিকার শিশুটির পরিবার।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসনাত জামান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর শিশুটির পরিবার জানতে পারে বিষয়টি। পরে ভুক্তভোগী শিশুর বাবা জাফর প্রামানিক বাদী হয়ে সোমবার সকালে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক আছে। আমরা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর