• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ৩০ মে, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৫৪ মিনিট পূর্বে
মোঃ আনোয়ার হোসেন আকাশ
রাণীশংকৈল প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৮ মে, ২০২৫, ০৭:৩৭ বিকাল

লাইসেন্স দেয়াড় নামে টিটিসি'র বিরুদ্ধে লাখ লাখ টাকা ঘুষ বাণিজ্য, তদন্তে দুদক

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়াড় নামে প্রশিক্ষণার্থীদের কাছে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঠাকুরগাঁও সরকারী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)'র বিরুদ্ধে। ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ পেয়ে এরই মধ্যে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়।

গেল কয়েক বছর ধরে লাইসেন্স বাবদ প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীর কাছে  ঘুষ হিসেবে ২৫০০ টাকা করে নিয়ে আসছে টিটিসি কর্তৃপক্ষ। এতে  প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করলেও ভয়ে মুখ খুলেনি কেউ।  

তবে প্রতিবাদ স্বরূপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম (ফেইসবুকে) পোস্ট করেন টিটিসি'র দেলোয়ার হোসেন নামে ইলেকট্রনিক্স বিভাগের এক প্রশিক্ষক। এতে নরে চরে বসে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ অনেকে। খবরটি ছড়িয়ে পরে প্রশাসনিক দপ্তরগুলোতেও।  

তিনি ওই পোস্টে লিখেন, ঠাকুরগাঁও টিটিসির দেশবিদেশের খণ্ডকালীন প্রশিক্ষক ফারুক হোসেন ১ লক্ষ ৭৫হাজার টাকা তোলেন। যিনি ঠাকুরগাঁও বিআরটিএ অফিসের দালাল হিসেবে পরিচিত। একই প্রতিষ্ঠানের অটোমোটিভ ট্রেডের চিফ ইন্সট্রাক্টর সাদেকুল ইসলাম সরাসরি এই ঘুষ লেনদেনের সাথে জড়িত।

শুধু বিগত ব্যাচের ৭০ জন নন এ-যাবৎ পাসকৃত সকল ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের পাসকৃত ছাত্রদের মোবাইল মারফত (যা প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষিত আছে) এর সত্যতা পাওয়া যাবে।

তিনি আরো লিখেন, আমি মোঃ দেলোয়ার হোসেন প্রশিক্ষক (ইলেকট্রনিক্স) টিটিসি প্রতিবাদ করলে আমাকে হুমকি প্রদান ও বিভিন্ন সময়ে হয়রানি করা হয়। আর কে কে জড়িত তা আমি জানি। বিআরটিএ নয় বরং বিআরটি এর নাম ভাঙ্গিয়ে এই টাকা উত্তোলন করা হয় উত্তোলনকৃত টাকা বিআরটি অফিসে প্রদান করা হয় কিনা তা জানি না। উক্ত ঘটনার রাজসাক্ষী হিসাবে কাজ করতে বিন্দু পরিমাণ পিছপা হবো না।

তবে এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানানো প্রশিক্ষক দেলোয়ার হোসেনকে গেল (১৭ মে) শোকজ করেন প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সামছুর রহমান।

এ বিষয়ে দেলোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নিজেদের অনিয়ম-দুর্নীতি ঢাকতেই তারা সকলেই একত্রিত হয়ে আমাকে শোকজ করেছে এবং তিনদিনের মধ্যে জবাব দিতে একটি নোটিশও দিয়েছেন। তবে আমি যা সত্য তাই বলেছি। দুদক তদন্ত করলেই সব বেড়িয়ে আসবে।

গেল বুধবার (৭ মে) দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়ের একটি দল বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) অফিসে অভিযান চালায়।

অভিযান শেষে দুদকের কর্মকর্তারা জানান, ঠাকুরগাঁও সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি'র) ৭০ জন প্রশিক্ষণার্থী তিন মাসের একটি প্রশিক্ষণে অংশ নেন এবং তাদের প্রত্যেকের কাছে ২৫০০ টাকা করে মোট ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা লাইসেন্স দেওয়া হবে মর্মে টিটিসি কর্তৃপক্ষ আদায় করে। দুদকের কর্মকর্তাগণ তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে নেমেছে।

পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ড্রাইভিং লাইসেন্সের নামে প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীর কাছে থেকে ৪ হাজার টাকা করে চাওয়া হয়। ভাড়ি যানবাহনের জন্য ৩৫০০ ও হালকা যানের জন্য ২৫০০ টাকা নেয় দেশ-বিদেশের খণ্ডকালীন প্রশিক্ষক ফারুক হোসেন।

যারা টাকা দিয়েছে তারাই শুধু লাইসেন্স প্রাপ্তি পরিক্ষায় পাশ করে দেওয়া হয়েছে। আর যারা দেয়নি তাদের অকৃতকার্য দেখানো হয়।
তবে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রতিষ্ঠান থেকে দ্রুত সটকে পড়েন ফারুক হোসেন ও অটোমোটিভ ট্রেডের প্রধান প্রশিক্ষক সাদেকুল সহ ইসলাম অন্যান্যরা। তবে এ ঘটনায় কৌশলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সামছুর রহমান ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার নামে কোন অর্থ নেওয়া হয়নি মর্মে প্রশিক্ষণার্থীদের কাছে একটি লিখিত নেন।

ভুক্তভোগী কয়েকজন প্রশিক্ষণার্থী অভিযোগ করে জানান, ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে ঘুষ  না দিলে অকৃতকার্য করা হতো। একটি প্রশিক্ষণে আমরা ৮০ জন ছিলাম, তারমধ্যে ১০ জন টাকা দিতে পারেনি তাই তাদের লাইসেন্স দেয়া হয়নি। এছাড়াও সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের প্রতিদিন ১৫০ টাকা করে দেওয়ার কথা থাকলে এটাও নিয়মিত দেন না কর্তৃপক্ষ। প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য ২/৩ লিটার তেল বরাদ্দ থাকলেও টিটিসি কর্তৃপক্ষের আমাদের জন্য আধা লিটার তেলও খরচ করে না। তারা প্রতিটি কাজে অনিয়ম-দুর্নীতি করে আসছে যা দেখার কেউ নেই। এখানে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে হরিলুট চলে। আমরা মনে করি প্রতিটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কিভাবে হয়েছে তা সঠিক তদন্ত প্রয়োজন। সরকারের ঊর্ধ্বতনরা সঠিক তদন্ত করলেই সব বেড়িয়ে আসবে। আর প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষক দেলোয়ার হোসেন ফেইসবুকে যা লিখেছেন তা সম্পূর্ণ সত্য।  

অভিযোগের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের খণ্ডকালীন প্রশিক্ষক ফারুক হোসেন ও অটোমোটিভ ট্রেডের প্রধান প্রশিক্ষক সাদেকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ফারুক হোসেন অস্বীকার করে জানান, প্রশিক্ষণার্থীদের কাছে কোন অর্থ নেয়া হয় না। কিছু শিক্ষক ও ছাত্র তাঁর নামে মিথ্যা বানোয়ার কথা বলে বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে। আর যারা বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও কথা জানান তিনি।

এমন নানা অনিয়মের বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সরকারী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি'র) ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সামছুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কোন প্রশিক্ষণার্থীর কাছে টাকা নেয়া হয়নি। কেউ যদি টাকা নিয়ে থাকে তা অজানা। আর যেই শিক্ষক অভিযোগ তুলে ফেসবুকে লিখেছে তাকে এরই মধ্যে শোকজ করা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ করতে না পারলে নেয়া হবে ব্যবস্থা।  

এ বিষয়ে দমন কমিশন সমন্বিত ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আজমির শরিফ মারজী বলেন, লাইসেন্স দেয়া বাবদ ৭০ জন প্রশিক্ষণার্থীর কাছে টাকা নিয়েছি টিটিসি কর্তৃপক্ষ এমন অভিযোগ আমরা পেয়েছি। আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com