
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনায় বিদেশি কোম্পানিকে যুক্ত করলে দেশের নিরাপত্তা বা সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে না। বরং এই উদ্যোগ দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়ার একটি বড় সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এই মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বন্দর ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা যাদের আনছি, তারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সফলভাবে কাজ করছে। এসব দেশে কখনও তাদের কারণে জাতীয় নিরাপত্তা বা সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়েনি। আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই—আপনারা যেন ভিত্তিহীন বিরোধিতা ও অপপ্রচারের শিকার না হন। যারা বিরোধিতা করছে, তাদের প্রতিহত করুন।”
তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড। বর্তমানে এই হৃৎপিণ্ড দুর্বল। আমরা যদি এর কার্যকারিতা দ্রুত উন্নত না করি, তবে অর্থনীতিকে সামনে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে না। অর্থনৈতিক সংকট ও বেকারত্ব নিরসনে বন্দর আধুনিকায়ন অত্যাবশ্যক।”
ড. ইউনূস বলেন, “আমরা যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, তারা বিশ্বমানের বন্দর পরিচালনায় অভিজ্ঞ। ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বহু বন্দর তারা পরিচালনা করছে। আমাদের লক্ষ্য, তাদের কাছ থেকে দ্রুত শেখা এবং ভবিষ্যতে নিজেরা দক্ষভাবে পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়া।”
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, যদি ২০৩১ সালের মধ্যে আমরা এই দক্ষতা অর্জন করি, তাহলে ২০৩৬ সালের মধ্যেই এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালিত বহু বন্দর বাংলাদেশিরাই চালাবেন। আমাদের দেশের মানুষ বিশ্বব্যাপী বন্দরে চাকরি ও নেতৃত্বের জায়গা করে নেবে।”
ভবিষ্যতের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বন্দর আধুনিক হলে তা শুধু বাংলাদেশের নয়, বরং নেপাল, ভুটানসহ আশপাশের দেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
প্রধান উপদেষ্টা জানান, “কুমিরা থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সমুদ্র উপকূলজুড়ে কর্মচাঞ্চল্য সৃষ্টি হবে। এই অঞ্চলে গড়ে উঠবে শিল্পাঞ্চল, আধুনিক মৎস্য চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প। আমাদের বন্ধু দেশগুলো এই উদ্যোগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং ইতোমধ্যেই আলোচনায় সাড়া দিয়েছে।”
শেষে তিনি বলেন, “আমরা চাই বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হোক। এজন্য আমাদের সাহসিকতা, উদারতা এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে।”
সর্বশেষ খবর
জাতীয় এর সর্বশেষ খবর