• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ০৮ জুন, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৪ সেকেন্ড পূর্বে
আব্দুল্লাহ আল নাইম
নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৮ জুন, ২০২৫, ১০:৪৬ রাত

বিপন্ন সাগর: বিশ্ব সমুদ্র দিবসে জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান

ছবি: সংগৃহীত

আজ ৮ জুন, বিশ্ব সমুদ্র দিবস। সমুদ্রের অপরিমেয় গুরুত্ব এবং এর প্রতি আমাদের দায়িত্বশীল আচরণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরতে দিবসটি পালিত হচ্ছে।

আমাদের জীবন এবং জীবিকার প্রধান উৎস এই সমুদ্র। পৃথিবীর প্রায় ৭০ শতাংশ ভূভাগ জলমগ্ন, যার মধ্যে ৯৭ শতাংশই সমুদ্র। আমাদের অক্সিজেনের অর্ধেকেরও বেশি আসে সমুদ্র থেকে। সামুদ্রিক ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন নামক ক্ষুদ্র শৈবাল অক্সিজেন উৎপাদনে মুখ্য ভূমিকা রাখে। খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানি এবং পরিবহনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমুদ্রের অবদান অনস্বীকার্য। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩০০ কোটির বেশি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমুদ্রনির্ভর পেশায় জড়িত।

তবে, কৃতজ্ঞতার পরিবর্তে আমরা এই বিশাল জলরাশির প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করছি। প্রতি বছর প্রায় ৮ থেকে ১২ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্য সমুদ্রে ফেলা হয়। প্রতি মিনিটে একটি ট্রাক ভর্তি প্লাস্টিক সমুদ্রে পতিত হচ্ছে। এই প্লাস্টিক সামুদ্রিক প্রাণীর জীবন এবং খাদ্যশৃঙ্খলের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। তামিলনাড়ু উপকূলে চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি কেজি মাছের পেটে গড়ে তিন থেকে সাতটি প্লাস্টিক কণা পাওয়া যায়। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা উপকূলে সাম্প্রতিক গবেষণায় বিপজ্জনক মাত্রায় মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে, যা খাদ্যচক্রের মাধ্যমে মানুষ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।

২০১২ ও ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক আইনি রায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরে প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার বর্গকিলোমিটার জলসীমা অর্জন করেছে। এই বিশাল সমুদ্রাঞ্চল দেশের অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে, যা সুনীল অর্থনীতি নামে পরিচিত। সামুদ্রিক মাছ ও শুঁটকি শিল্প, জাহাজ ও বন্দর ব্যবসা, গভীর সমুদ্র পর্যটন এবং খনিজ সম্পদ আহরণ এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে, এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি এখনো যথেষ্ট নয়। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগ থাকলেও বাজেট, যন্ত্রপাতি ও উপাত্ত সংগ্রহের ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছের প্রজাতিগুলো তাদের আবাসস্থল পরিবর্তন করছে, যা মাছ ধরার মৌসুমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততা, ভূমি ক্ষয় এবং ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা বাড়ছে।

বিশ্বের অনেক দেশ সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং ইউরোপের অনেক দেশ ড্রোন, স্যাটেলাইট ও রিমোট সেন্সিংয়ের মাধ্যমে সমুদ্রের তলদেশ পর্যবেক্ষণ, জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং মৎস্য সম্পদ নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত এ ধরনের প্রযুক্তিভিত্তিক মডেল তৈরি করা হয়নি।

সমুদ্রের নীরবতাকে দুর্বলতা ভেবে আমরা একে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছি। প্লাস্টিক দূষণ এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে সমুদ্রের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এখনই সমুদ্রের দিকে নজর না দিলে এটি আমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। তাই, সমুদ্র রক্ষা শুধু পরিবেশ রক্ষা নয়, এটি আমাদের ভবিষ্যৎ রক্ষারও সংগ্রাম।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com