
শেরপুর: পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মধুটিলা ইকোপার্কে দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়েছে। ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে প্রিয়জনদের সাথে সবুজ প্রকৃতি আর উঁচুনিচু পাহাড়ি টিলার মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন ভ্রমণপ্রেমীরা।
ঈদের চতুর্থ দিন মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, কর্মজীবী মানুষ কয়েক দিনের ছুটি পেয়ে প্রকৃতির সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে মধুটিলা ইকোপার্কে এসেছেন। একসময় এই পার্কে দেশের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র শুটিং হয়েছিল। শহরের ইট, পাথর আর কংক্রিটের দেয়ালে বন্দি জীবন থেকে মুক্তি পেয়ে এখানে এসে তারা আনন্দিত। তবে ভ্যাপসা গরম কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
পার্কটিতে রয়েছে সারি সারি সবুজ গাছগাছালি, মনোরম স্টার ব্রিজ, পাহাড়ি টিলায় সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার ও বিভিন্ন প্রাণীর ভাস্কর্য। এছাড়াও রয়েছে বন বিভাগের সৃজিত মিশ্র বন ও প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা সবুজ গাছের সমারোহ। মধুটিলার ওয়াচ টাওয়ারে উঠে পর্যটকরা প্রতিবেশী দেশ ভারতের মেঘালয় রাজ্যের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। ২০০ ধাপের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে চারপাশের সবুজের সমারোহ দেখে পর্যটকদের মন ভরে উঠছে। পাহাড়ি লেকে পেডেল বোটে চড়ে আনন্দ পাচ্ছেন অনেকে। দূরের পর্যটকদের জন্য পাহাড়ি টিলার মনোরম পরিবেশে বন বিভাগের মহুয়া রেস্ট হাউস রয়েছে, যা আট হাজার টাকায় (ভ্যাট ছাড়া) অগ্রিম বুকিং দিয়ে দিনের বেলায় ব্যবহার করা যায়।
পার্কের চারপাশে বন বিভাগ দীর্ঘমেয়াদি মিশ্র বন বাগান তৈরি করায় প্রকৃতির সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব বনে বন্য হাতির বিচরণও দেখা যায়। সব মিলিয়ে প্রকৃতি যেন সেজেগুজে পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুত। পর্যটকরা এখানে এসে শহরের একঘেয়েমি ও কর্মক্লান্তি ভুলে নতুন উৎসাহে জীবন শুরু করার প্রেরণা পাচ্ছেন।
শ্রীবরদী থেকে ঘুরতে আসা সাবিজুল ইসলাম বলেন, "এই পার্কের পাহাড়ি গাছগাছালি ও প্রাকৃতিক উঁচু পাহাড়ের সবুজ বন দেখে খুব ভালো লাগছে। তবে গরমের কারণে ঘোরাঘুরি করতে অসুবিধা হচ্ছে। এখানে ঝুলন্ত ব্রিজসহ নতুন রাইড স্থাপন করা হলে আরও বেশি পর্যটক আসবেন।"
পার্কের ইজারাদার মো. মজিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, "এটি কৃত্রিম কোনো পার্ক নয়, প্রকৃতির নিয়মেই এটি তৈরি হয়েছে। এখানে পর্যটকরা প্রকৃতির নিখাদ ভালোবাসা উপভোগ করতে পারেন। পার্কে প্রবেশের ফি জনপ্রতি ১০০ টাকা নির্ধারিত থাকলেও ঈদ উপলক্ষে অর্ধেক মূল্যে প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। এছাড়া ওয়াচ টাওয়ারসহ অন্যান্য রাইডের নির্ধারিত ফি দিয়ে ব্যবহার করা যাচ্ছে।"
ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা দেওয়ান আলী বলেন, "অতিরিক্ত তাপমাত্রা পর্যটকদের জন্য কিছুটা সমস্যা করছে। তার পরেও ঈদের ছুটিতে এখানে অনেক পর্যটকের ভিড়। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইজারাদার কর্তৃপক্ষ ও বন বিভাগের লোকজন টহল দিচ্ছেন। এখানে নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি নেই। এই পার্কটি কোলাহলমুক্ত, তাই এখানে প্রিয়জনদের নিয়ে ভ্রমণে এলে প্রকৃতির ভালোবাসায় সিক্ত হবেন সবাই।"
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর