
চাটমোহর উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের খৈরাশ গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হামলার শিকার একটি পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, হামলাকারী রাশেদুল ইসলাম রবির স্বজনরা তাদের হুমকি দিচ্ছেন।
এমনকি সম্প্রতি দেশীয় অস্ত্রের টিকটক ভিডিও বানিয়ে অনলাইনেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ মে রাত ১১টার দিকে খৈরাশ দক্ষিণপাড়ার একটি মুদি দোকানের সামনে শান্ত মোল্লা (১৬) ও রাহুল মোল্লা (১৮) বসে ছিলেন। এসময় রাশেদুল ইসলাম রবি (২০) তাদের সেখান থেকে উঠে যেতে বলেন। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রবি তাদের গালিগালাজ করে। শান্তর বড় ভাই ফরিদ মোল্লা (২৭) এগিয়ে গেলে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। অভিযোগ, রবি তার কাছে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে শান্ত, রাহুল ও ফরিদকে এলোপাথাড়ি আঘাত করে।
গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাদের চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
স্থানীয়রা রবিকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় আহত শান্তর বাবা পলাশ মোল্লা বাদী হয়ে ২৭ মে রবিকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
পলাশ মোল্লার অভিযোগ, ঘটনার পরদিন রবির বাবা রফিকুল প্রামানিক, চাচা শফিকুল প্রামানিক, রোজিম প্রামানিক, মামাতো ভাই বাশার, মামা হেলাল ও দুলাল, চাচাতো ভাই সাগরসহ কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের বাড়িতে গিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
পলাশ মোল্লা বলেন, “২৭ মে সকালে তারা বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে গেছে। বিভিন্ন সময় তারা আমাদের পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিচ্ছে। এমনকি ধারালো অস্ত্র দিয়ে টিকটক বানিয়ে তার মাধ্যমেও হুমকি দিচ্ছে। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
অভিযোগ উঠেছে, অভিযুক্ত রবির চাচাতো ভাই সাগর তার টিকটক আইডিতে বড় একটি ধারালো ছুরি দেখিয়ে একটি ভিডিও আপলোড করেছে, যেখানে ভুক্তভোগীদের প্রতি ইঙ্গিতপূর্ণ হুমকি দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে রবির মামা হেলাল উদ্দিন বলেন, “শান্ত আমাকে জানায় রবি তাদেরকে গালিগালাজ করছে। আমি রবিকে নিষেধ করি এবং তাকে ধাক্কা দিয়ে বাড়িতে চলে যেতে বলি। এরপর তাদের মধ্যে মারামারি শুরু হলে আমি ঠেকাতে পারিনি। হুমকি দেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।”
রবির চাচা রোজিম প্রামানিক বলেন, “আমি ঘটনার বিষয়ে কিছু জানতাম না। বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা।”
এ বিষয়ে সাগরের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
চাটমোহর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নয়ন কুমার সরকার জানান, এ ঘটনায় মামলা চলমান আছে এবং আসামি গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে রয়েছে।
তিনি বলেন, “হুমকির বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। ভুক্তভোগীরা থানায় জিডি করলে আমরা আইনগত সহায়তা দেবো। কারা হুমকি দিচ্ছে, তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর