
বাংলাদেশসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাস নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্টের (উপধরন) সংক্রমণ বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া দেশের বাইরে না যাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একই সঙ্গে সংক্রমণ ঝুঁকি মোকাবিলায় দেশের সব স্থল ও বিমানবন্দরে হেলথ স্ক্রিনিং ও নজরদারি বাড়াতেও বলা হয়েছে। পরামর্শ দেওয়া হয়েছে আবারও মাস্ক পরার এবং স্থলবন্দরে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. হালিমুর রশিদের স্বাক্ষরে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট, বিশেষ করে অমিক্রন এলএফ. ৭, এক্সএফজি, জেএন-১ এবং এনবি ১.৮.১-এর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া সংক্রমণ প্রতিরোধে নির্দেশনাগুলো হলো : দিনে অন্তত সাতবার প্রয়োজনমতো সাবান দিয়ে হাত ধোয়া (অন্তত ২৩ সেকেন্ড)। নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করা। আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরে থাকা। অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ না করা। হাঁচি-কাশির সময় বাহু/ টিসু/ কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখা। দেশের বিভিন্ন স্থল/নৌ/ বিমানবন্দরে আইএইচআর (IHR-2005) স্বাস্থ্য ডেস্কগুলোয় সতর্ক থাকা, হেলথ স্ক্রিনিং এবং সার্ভেল্যান্স জোরদার করা। দেশের পয়েন্টস অব এন্ট্রিগুলোয় থার্মাল স্ক্যানার/ ডিজিটাল হেন্ড হেল্ড থার্মোমিটারের মাধ্যমে নন-টাচ টেকনিকে তাপমাত্রা নির্ণয় করা। চিকিৎসা কাজে স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ মাস্ক, গ্লাভস এবং রোগ প্রতিরোধী পোশাক (পিপিই) মজুত রাখা। এছাড়া ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য রোগ প্রতিরোধ নির্দেশনাগুলো প্রচার করা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভারত ও অন্যান্য আক্রান্ত দেশ ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকা।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টার ১০১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ১২.৮৭ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা এখন আর আগের মতো প্রাণঘাতী নেই। সাধারণ জ্বর, সর্দি বা মৌসুমি ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মতো। রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে না। তাই ভাইরাস বহনকারী ব্যক্তিরা এখন আর পরীক্ষা করছেন না। ধারণা করা হয়, প্রকৃত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাকেন্দ্র (আইইডিসিআর)-এর সায়েন্টিফিক অফিসার ডা. মো. আবদুল্লাহ ওমর নাসিফ বলেন, আমাদের দেশে এখন XFG (এক্সএফজি) ভ্যারিয়েন্টটি সংক্রমণ শুরু করছে। আইসিডিডিআরবি চলতি বছরের জুন মাসে ১৪টি জিনোম সিকোয়েন্স করে ১২টিতেই এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করেছে।
তিনি বলেন, রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের সচেতন হওয়া জরুরি। বিশেষ করে বয়স্ক, গর্ভবতী ও দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত মানুষকে সতর্ক হতে হবে। যাদের শরীরে রোধ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের করোনা সব সময় ঝুঁকিপূর্ণ।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর