
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনের সামনে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের অবস্থান কর্মসূচি নিয়ে যখন চরম উত্তেজনা, তখন স্পষ্ট বক্তব্য দিলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। বললেন, “ইশরাক হোসেনকে আর মেয়রের শপথ পড়ানোর কোনো আইনি পথ নেই।”
সোমবার এক বক্তব্যে উপদেষ্টা আসিফ বলেন, “যখন ইশরাকের শপথের বিষয়টি বিচারাধীন ছিল, তখন গেজেটের মেয়াদও শেষ হয়ে যায়। একইসঙ্গে মেয়াদোত্তীর্ণ হয় ঢাকা দক্ষিণ সিটির বোর্ডের। এখন আর স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষ থেকে তার শপথ অনুষ্ঠানের কোনো সুযোগ নেই। এখানে কোনো আইন ভঙ্গও হয়নি।”
তিনি অভিযোগ করেন, “আইনের সুযোগ না থাকলেও ইশরাক হোসেন ক্ষমতা প্রদর্শনের মাধ্যমে নগর ভবন দখল করে রেখেছেন। এতে নগরবাসীর নিত্যদিনের সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দক্ষিণ ঢাকায় যেসব নাগরিক সেবা চলত স্বাভাবিক নিয়মে, তা এখন বাধাগ্রস্ত। আমরা হিসাব করে দেখেছি, গত এক মাসে এই বাধার কারণে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ নাগরিক সেবা ব্যাহত হয়েছে।”
শুধু তাই নয়, উপদেষ্টা আসিফ মনে করেন, একজন ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ের নেতার’ কাছ থেকে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ নগরবাসী আশা করেনি। তিনি বলেন, “আইনের বাইরে অবস্থান নিয়ে কোনো রাজনৈতিক নেতার ব্যক্তিগত দাবি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা গণতন্ত্রের চর্চাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। যারা আইনের শাসনের কথা বলেন, তারাই যদি এমন করে আইন উপেক্ষা করেন, তা হলে সেটা দেশের জন্য, শহরের জন্য এবং রাজনীতির জন্য শুভ বার্তা নয়।”
তবে, নাগরিক সেবা বন্ধ হয়ে যায়নি বলেও জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “নগর ভবন দখল থাকায় ডিএসসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এখন বিকল্প স্থান, ওয়াসা ভবনে বসেই দায়িত্ব পালন করছেন। আমরা চেষ্টা করছি যাতে নগরবাসী চূড়ান্ত ভোগান্তিতে না পড়েন।”
সবশেষে উপদেষ্টা আসিফের আহ্বান, “সরকার চায় যারা নিজেদের গণতন্ত্র এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের অংশ মনে করেন, তারা যেন দায়িত্বশীলতা ও পরিপক্ব আচরণ দেখান। আইন ও নিয়মের মধ্যে থেকেই রাজনৈতিক দাবিদাওয়া তোলা হোক। কারণ আইনের বাইরে গিয়ে দাবি মানাতে গেলে সেটি আন্দোলন নয়, বিশৃঙ্খলা হয়ে দাঁড়ায়।”
এদিকে নগর ভবনে ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে অবস্থান কর্মসূচি চলছে। বিএনপির দাবি, সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে শপথ থেকে বঞ্চিত করেছে। তবে উপদেষ্টার এই বক্তব্যের পর রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে—ইশরাকের এই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কী? আর নাগরিক সেবা স্বাভাবিক করতে কতটা সময় লাগবে?
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর