
কিশোরগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম (৯২) আজ মঙ্গলবার ভোর ৫টায় বার্ধক্যজনিত কারণে বাজিতপুর উপজেলার হিলচিয়ার বড়মাইপাড়া এলাকায় নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সখিনা বেগমের ভাগনি ফাইরুন্নেছা আক্তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ফাইরুন্নেছার ছেলে কাওসার মিয়া জানান, আজ বাদ আসর নিকলী উপজেলার গুরুই মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।
নিকলী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহানা মজুমদার জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগমকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
সখিনা বেগম কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত নিকলী উপজেলার গুরুই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম সোনাফর মিয়া ও মায়ের নাম দুঃখী বিবি। নিঃসন্তান সখিনা বেগমের স্বামী কিতাব আলী মুক্তিযুদ্ধের আগেই মারা যান। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি সশস্ত্র যুদ্ধে অংশ নেন।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, সখিনা বেগম ১৯৭১ সালে নিকলীতে ‘বসু বাহিনীর’ নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে রাঁধুনির কাজ করতেন। একইসঙ্গে রাজাকারদের গতিবিধির খবর সংগ্রহ করে মুক্তিযোদ্ধাদের জানাতেন। একপর্যায়ে তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন, তবে কৌশলে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। পালিয়ে আসার সময় তিনি একটি ধারালো দা নিয়ে আসেন এবং পরবর্তীতে সেই দা দিয়ে পাঁচজন রাজাকারকে কুপিয়ে হত্যা করেন। তাঁর ব্যবহৃত সেই দা বর্তমানে ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে, যেখানে সখিনা বেগমের নামফলক রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধার খেতাব পান।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা চান্দালী মিয়া বলেন, নিকলীকে রাজাকারমুক্ত করতে সখিনা বেগমের অবদান অনস্বীকার্য।
হিলচিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নিয়াজ মামুন রহমান পুটন জানান, সখিনা বেগম প্রায় ৪০ বছর ধরে বড়মাইপাড়া গ্রামে বসবাস করছিলেন।
গুরুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. তোতা মিয়া জানান, সখিনা বেগম দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর