
সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় ভিডব্লিউভি (ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট) কর্মসূচির আওতায় চাল বিতরণে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে উপজেলাজুড়ে আলোচনা ও সমালোচনা চলছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী চাকরিজীবী পরিবারের সদস্য, অন্য কোনো ভাতাভোগী, দুইয়ের বেশি সন্তান রয়েছে এমন পরিবার এবং অপেক্ষাকৃত ধনী ব্যক্তিরা এই কর্মসূচির আওতাভুক্ত হওয়ার যোগ্য নন। তবে তা মানা হয়নি।
তালা সদর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ভিডব্লিউভি তালিকায় ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলামের স্ত্রী ও নিকটাত্মীয়দের নাম অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতা ও নাগরিক কমিটির সহ-সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজা। প্রতিকার চেয়ে তিনি তালা উপজেলা নাগরিক কমিটি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোঃ রাসেল উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, গত ৪ জুন তালা সদর ইউনিয়ন পরিষদ হলরুমে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, প্যানেল চেয়ারম্যানসহ ইউপি সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ৮২ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। ওই ওয়ার্ডে ৪২ জনকে ভাতা দেওয়ার কথা। তবে ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলাম সরকারি নিয়ম উপেক্ষা করে ৪২ নম্বর ক্রমিকে তার স্ত্রী জুলিয়া খাতুন এবং ১১৬ নম্বরে পপি খাতুন, ৭৭ নম্বরে লিপিয়া খাতুন, ৮৮ নম্বরে সুরাইয়া বেগম, ০৩ নম্বরে তহমিনা বেগম, ৭২ নম্বরে আসমা খাতুন, ৫৮ নম্বরে ইয়াসমিন, ১১১ নম্বরে ফতেমা খাতুন, ৬১ নম্বরে ইতি খাতুন, ১১৩ নম্বরে জান্নাতুল খাতুন ও ১০ নম্বরে বৃষ্টি খাতুনের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, এসব পরিবার অপেক্ষাকৃত সচ্ছল এবং অনেকেরই অন্য ভাতা চালু আছে।
উপজেলা নাগরিক কমিটির সহ-সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজা জানান, যাচাই-বাছাইয়ের সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন। তিনি চলে আসার পর ইউপি সদস্যরা যোগসাজশ করে মফিজুল ইসলাম তার স্ত্রীসহ অন্য ভাতাভোগী ও ধনী পরিবারের সদস্যদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন, যা সরকারি পরিপত্রের লঙ্ঘন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, পুরো উপজেলায় ভিডব্লিউভি চাল বিতরণে স্বজনপ্রীতি হয়েছে। প্রকৃত গরিব মানুষ বঞ্চিত হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাজমুন নাহার জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোঃ রাসেল জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর