
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে ‘প্লাস্টিক দূষণ আর নয়’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পোশাক শ্রমিক উন্নয়ন জনকল্যাণ সংস্থা জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে।
আজ সকাল সাড়ে দশটায় আয়োজিত এই কর্মসূচিতে শ্রমিক নেতারা পরিবেশ দূষণ রোধে সরকারের কাছে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান। তাঁরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, দূষণ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পৃথিবী চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, যার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর।
বক্তারা বলেন, বনভূমির গাছপালা কেটে ফেলা এবং শিল্পকারখানার ধোঁয়া ও দূষিত বর্জ্য পরিবেশকে মারাত্মক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। পোশাক শিল্পেও পরিবেশ দূষণের প্রভাব দীর্ঘ দিন ধরে পরিলক্ষিত হচ্ছে। কারখানার আশেপাশে বসবাস করা শ্রমিকদের খাবার, তাপমাত্রা ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ নোংরা হওয়ার কারণে তারা প্রায়শই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। কারখানায় ব্যবহৃত রাসায়নিক বর্জ্য ও অপরিচ্ছন্ন কর্মপরিবেশের কারণে শ্রমিকদের পেশাগত রোগ হচ্ছে। কারখানার ভেতরে সঠিক বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা না থাকায় শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও কর্মপরিবেশ ঝুঁকিপূর্ণ।
শ্রমিক নেতারা পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণের দাবি জানান:
* পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
* শিল্প কারখানার বর্জ্য ও রাসায়নিক পদার্থের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় সরকারি পর্যবেক্ষণ জোরদার করা।
* শিল্প কারখানায় রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারের দিকনির্দেশনা সঠিকভাবে মেনে চলা এবং ইটিপির মাধ্যমে ময়লা জল পরিশোধন করে পুনরায় ব্যবহার করা।
* কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে পরিবেশবান্ধব কারখানা তৈরি করা।
* জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধি করা।
* কারখানায় ন্যায্য রূপান্তরে বায়ার ও ব্র্যান্ডকে পরিবেশবান্ধব শিল্পকারখানা তৈরিতে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া।
* পাহাড় ও গাছপালা কেটে, নদী-নালা ভরাট করে শিল্পকারখানা ও স্থাপনা নির্মাণ রোধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া।
* পরিবেশ আইন অমান্যকারীদের শাস্তির আওতায় আনা।
* প্লাস্টিক দ্রব্য ব্যবহার রোধে মালিক, শ্রমিক, বায়ার, ব্র্যান্ড, দেশী-বিদেশী উন্নয়ন সংস্থা ও সরকারকে সম্মিলিতভাবে কাজ করা।
* পরিবেশবান্ধব ব্যবসানীতি প্রণয়ন করা।
* পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার্থে সরকারকে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া।
* বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বে ফাস্ট ফ্যাশনের জন্য শ্রমিকদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ বন্ধ করার মাধ্যমে পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের জন্য সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ তৈরি করা।
* জাতীয় বাজেটে পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধসহ শ্রমিকের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া নিরসনকল্পে বরাদ্দ রাখা।
* পরিবেশ দূষণের ফলে শ্রমিকেরা যেসব স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন, তা রোধকল্পে সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
সমাবেশে পোশাক শ্রমিক উন্নয়ন জনকল্যাণ সংস্থার সভাপতি, সহ-সভাপতি, দপ্তর সম্পাদক, নারী কল্যাণ সম্পাদক, অর্থ সম্পাদকসহ বিভিন্ন এলাকার ৪০টি ইউনিয়নের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও শ্রমিকরা বক্তব্য রাখেন।
সর্বশেষ খবর