
নওগাঁর ধামইরহাট থানায় রক্ষিত একটি বাক্সের তালা খুলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার (এইচএসসি) প্রশ্নপত্র বের করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (১৭ জুন) এ ঘটনা ঘটে।
প্রশ্নপত্রগুলো ছড়িয়ে পড়েছে কিনা, কিংবা গোপনে ফাঁস করা হয়েছে কি না তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধুম্রজাল। ঘটনার সঠিক তদন্তে জেলা প্রশাসন তিন সদস্য বিশিষ্ট ও জেলা পুলিশ তিন সদস্য বিশিষ্ট পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আগামী ৩ দিনের মধ্যে কমিটিগুলোকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (১৭ জুন) এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণের জন্য প্রশ্নপত্রের একটি ট্রাঙ্ক থানায় রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আসে। ট্রাঙ্কটি থানার একটি হাজতখানায় রাখা হয়। বৃস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে উপজেলা পরীক্ষা কমিটির সদস্যরা প্রশ্নপত্রের বাক্স পরিদর্শনে গেলে ঘটনা ধরা পড়ে।
এ বিষয়ে উপজেলা পরীক্ষা কমিটির সদস্য ও ধামইরহাট সরকারী এমএম ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ওই ট্রাঙ্কে ধামইরহাট সরকারি এমএম ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের ইতিহাস দ্বিতীয় পত্রের ৭০ মার্কের লিখিত পরীক্ষার ৫০ সেট প্রশ্নপত্র ছিল। বৃহস্পতিবার থনায় গিয়ে দেখা যায়, ট্রাঙ্কের তালা খোলা। ট্রাঙ্কের ভেতর থেকে প্রশ্নপত্র বের করা হয়েছে এবং বাইরে দুটি প্রশ্নপত্র ছেঁড়া অবস্থায় পাওয়া গেছে।
বাক্স ভেঙে প্রশ্নপত্র বের করা হলেও তা বাইরে ছড়িয়ে পড়েনি বলে দাবি করেছেন নওগাঁর পুলিশ সপার সাফিউল সারোয়ার। তিনি বলেন, থানার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হয়েছি প্রশ্নপত্রগুলো ছড়িয়ে পড়েনি। ইতোমধ্যে দ্বায়িত্বে অবহেলার দায়ে ধামইরহাট থানার একজন সাব ইন্সপেক্টর ও একজন কনসটেবলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ঘটনা তদন্তে পত্নীতলা পুলিশ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যদের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি তদন্ত করছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে তাদেরকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম বলেন, যিনি হাজতখানায় রাখা ট্রাঙ্ক থেকে প্রশ্ন পত্র বের করেছেন তাকে সামান্য সময়ের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করতে থানায় আনা হয়েছিল। তবে তদন্তের স্বার্থে সেই ব্যক্তির পরিচয় জানানো হচ্ছে না।
তবে একটি সূত্র জানায়, গত ২৪ এপ্রিল রাতে উপজেলার বড়থা বাজারে দুর্বৃত্তের হামলায় উজ্জল হোসেন নামে একজন ছাগল ব্যবসায়ী নিহত হয়। এই মামলার আসামি বংশিবাটি এলাকার সাগর হোসেনকে (৩০) আটক করে মঙ্গলবার রাতে থানায় আনা হয়। পরে তাকে থানা হাজতে রাখা হয়।
অন্যদিকে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সাদিয়া আফরিনকে প্রধান করে পৃথক আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সাদিয়া আফরিন বলেন, তদন্তের কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্রশ্নপত্রগুলো সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে গাফলতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পড়েছে কিনা তা এখনো জানা যায়নি। শনিবার (২১ জুন) ধামইরহাট থানায় রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনা তদন্তে যাবেন বলে জানা গেছে।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর