
চুয়াডাঙ্গা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে নানা প্রশ্ন ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পরীক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অভিযোগ উঠেছে, পরীক্ষার আগের দিন গভীর রাতে সিভিল সার্জন কার্যালয় খোলা রেখে গোপন বৈঠক করা হয়েছে এবং পরীক্ষার দিন কেন্দ্রে কেন্দ্রে গিয়ে নির্দিষ্ট পরীক্ষার্থীদের অসদুপায়ে সহায়তা করা হয়েছে।
গত শুক্রবার (২০ জুন) সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত জেলার সদর ও দামুড়হুদা উপজেলার ১৯টি কেন্দ্রে একযোগে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৬তম গ্রেডে ‘স্বাস্থ্য সহকারী’ পদে ৩৯টি শূন্য পদের বিপরীতে ১৩ হাজার ৬৬৮ জন চাকরিপ্রত্যাশী আবেদন করেন। প্রতি পদের বিপরীতে প্রায় ৩৫০ জন প্রতিযোগিতা করেন। বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞানের ওপর ৮০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়, যার ফলাফলের ভিত্তিতে উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ডাকা হবে।
পরীক্ষার আগের রাতে সিভিল সার্জন অফিস খোলা রাখা এবং কর্মকর্তাদের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাধারণত সন্ধ্যার পর কার্যালয় বন্ধ থাকার কথা থাকলেও বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত অফিস খোলা ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
অনেক পরীক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, তাদের পরীক্ষার কেন্দ্র ও সিট প্ল্যান দুই দফা পরিবর্তন করা হয়েছে। এতে বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। কেউ কেউ এসএমএসের মাধ্যমে কেন্দ্র পরিবর্তনের তথ্য জানতে পারলেও পরীক্ষার দিন বিভ্রান্তিতে পড়েন।
পরীক্ষাকক্ষের অনিয়ম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে সরব হয়েছেন। আয়েশা হুসাইন নামের এক পরীক্ষার্থী অভিযোগ করেন, চুয়াডাঙ্গা কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৩০২ নম্বর কক্ষে একজন পরীক্ষক এক পরীক্ষার্থীকে উত্তর বলে দিচ্ছিলেন। প্রতিবাদ করলে হল পরিদর্শক এসে ওই পরীক্ষককে নিয়ে যান। তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, সিভিল সার্জন অফিস রাত দুইটা পর্যন্ত খোলা ছিল কেন?
বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ নাগরিক ও ছাত্র সংগঠনগুলো তদন্তের দাবি জানিয়েছে। চুয়াডাঙ্গা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র তামান্না খাতুন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জন মহোদয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে। পরীক্ষার হলে পরীক্ষক কর্তৃক সহযোগিতা করার অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
এসব বিষয়ে জানতে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সর্বশেষ খবর