
নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলায় নিজ ঘরে সিতারা বেগম (৭০) নামের এক বৃদ্ধা নারীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনার ২০ ঘণ্টার মধ্যে ক্লু-লেস এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন বেগমগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ দুর্গাপুর গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে মোরশেদ আলম ওরফে মুন্সি (৩২) এবং কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ থানার বিনয়নগর গ্রামের মৃত নুর নবী খোকনের ছেলে মো. মাহফুজুন নবী সুজন (৩৩)।
শনিবার ভোররাতে বেগমগঞ্জের দুর্গাপুর ও সোনাইমুড়ীর বজরা বাজার এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কালিকাপুর গ্রামের ওসমান আলী হাজী বাড়িতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহত সিতারা বেগম একই এলাকার মৃত মোফাজ্জল হকের স্ত্রী এবং পাঁচ সন্তানের জননী ছিলেন।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময়ে চোরেরা চুরি করতে গিয়ে বিধবা সিতারা বেগমকে জবাই করে হত্যা করে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে ক্লু-লেস এই হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত মোরশেদ আলম ওরফে মুন্সিকে বেগমগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বসতঘরের শয়নকক্ষ থেকে ভিকটিম সিতারা বেগমের ব্যবহৃত একটি বাটন মোবাইল ফোন, কয়েকটি প্রিন্টের শাড়ি, জামাকাপড় ও একটি সাউন্ড বক্স উদ্ধার করা হয়।
মোরশেদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোনাইমুড়ীর বজরা বাজার এলাকা থেকে হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত প্রধান আসামি সুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে, ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি দেশীয় দা, একটি স্ক্রু ড্রাইভার, একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, নিহত সিতারা বেগম তার এক ছেলের সাথে সোনাইমুড়ী পৌরসভা এলাকায় বসবাস করতেন। ঈদুল আজহা উপলক্ষে তিনি গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি নিজ ঘরে একা ঘুমিয়ে ছিলেন। শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত বাড়ির লোকজন তার কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরে গিয়ে তার রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান।
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম জানান, চোরকে চিনে ফেলায় ওই নারীকে জবাই করে হত্যা করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে প্রধান আসামি সুজন প্রাথমিকভাবে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। আসামিদের নোয়াখালী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
সর্বশেষ খবর