
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন বিমান হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (UAE)। দেশটি মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা ও অস্থিতিশীলতা রোধে অবিলম্বে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। রোববার (২২ জুন) এক বিবৃতিতে আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অবস্থান তুলে ধরে।
রয়টার্স, দ্য ন্যাশনাল ও আলজাজিরার খবরে বলা হয়েছে, আমিরাত সরকার জানায়, “ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাত আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে। আমরা দ্রুত কূটনৈতিক সংলাপ এবং উত্তেজনা হ্রাসে কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে চাই।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “স্থিতিশীলতা, সমৃদ্ধি এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সব পক্ষের মধ্যে আলোচনার বিকল্প নেই। উত্তেজনাপূর্ণ এই পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হলে তা গোটা অঞ্চলকে অপ্রত্যাশিত সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে পারে।”
ইউএই-এর পাশাপাশি সৌদি আরব, কাতার ও ওমানও ইরান-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “মার্কিন হামলা ও তার জবাবে ইরানের প্রতিক্রিয়া এমন এক দিক নিচ্ছে যা পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করতে পারে। এই মুহূর্তে আলোচনার টেবিলে ফিরে যাওয়াই একমাত্র পথ।”
যুক্তরাষ্ট্রে ইরানে হামলার পর থেকেই হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। দেশটির প্রশাসন বলছে, এই হামলার পর “সাইবার আক্রমণ, একক হামলাকারী (লোন উলফ) বা সহিংস চক্রান্তের” আশঙ্কা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে পররাষ্ট্র দপ্তর বিশ্বজুড়ে মার্কিন নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরতদের প্রতি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে যেন তারা প্রয়োজন ছাড়া ভ্রমণ এড়িয়ে চলেন এবং স্থানীয় পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন থাকেন।
বিশ্লেষকদের মতে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের এই অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাপূর্ণ ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি ভারসাম্যপূর্ণ কূটনৈতিক বার্তা। যুদ্ধ ও সংঘাতের পরিবর্তে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে বিশ্বাসী দেশগুলোকে পাশে টানতে আমিরাতের এ ধরনের আহ্বান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
সাম্প্রতিক এই ইরান-যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল ত্রিমুখী উত্তেজনা বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। আর এই প্রেক্ষাপটে আমিরাতের মতো আঞ্চলিক শক্তির পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণ সমাধানের ডাক আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর