
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষে দুই বছর মেয়াদি এমফিল প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের কাছ থেকে নির্ধারিত ফরমে আবেদনপত্র আহ্বান করেছে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অথবা ইউজিসি কর্তৃক স্বীকৃত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক বা স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ সাপেক্ষে সরাসরি আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া, এমবিবিএস অথবা সমমানের ডিগ্রিধারীরা তাদের ডিগ্রির সাথে সম্পর্কযুক্ত সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা ইনস্টিটিউটে আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনকারীদের শিক্ষাজীবনের সকল পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগ/শ্রেণি এবং সিজিপিএ পদ্ধতিতে ৫.০ স্কেলে ন্যূনতম ৩.৫০ এবং ৪.০০ স্কেলে ন্যূনতম ৩.০০ থাকতে হবে। প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীভুক্ত ও হিজড়া প্রার্থীদের ক্ষেত্রে সকল পরীক্ষায় ন্যূনতম দ্বিতীয় বিভাগ/শ্রেণি এবং সিজিপিএ পদ্ধতিতে ৫.০০-এর মধ্যে ৩.০০ এবং ৪.০০-এর মধ্যে ২.৫০ থাকতে হবে।
আগ্রহী প্রার্থীদের সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা ইনস্টিটিউটের শিক্ষকদের মধ্য থেকে তত্ত্বাবধায়ক নির্বাচন করে তার অধীনে এমফিল প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য আবেদন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে (https://du.ac.bd) ২২ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত আবেদন ফরম পাওয়া যাবে। আবেদনপত্র যথাযথভাবে পূরণ করে ভর্তি ফরমের ফিস বাবদ জনতা ব্যাংকের (ঢাবি, টিএসসি শাখা) ১ হাজার টাকা (অফেরতযোগ্য) জমা রশিদের মূল কপিসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যান/ইনস্টিটিউটের পরিচালকের অফিসে ৩০ জুনের মধ্যে জমা দিতে হবে।
আবেদনপত্রের সাথে ভর্তি ফরমের ফিস বাবদ জমাকৃত ১ হাজার টাকার রশিদের মূলকপি, সকল পরীক্ষা পাসের সনদ ও নম্বরপত্রের ফটোকপি, সম্প্রতি তোলা পাসপোর্ট সাইজের এক কপি ছবি সংশ্লিষ্ট তত্ত্বাবধায়ক/বিভাগের চেয়ারম্যান/ইনস্টিটিউটের পরিচালক কর্তৃক সত্যায়িত করে জমা দিতে হবে। একই সাথে গবেষণার একটি রূপরেখা (সাইনোপসিস) জমা দিতে হবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিদেশ থেকে স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ভর্তির ক্ষেত্রে আবেদনপত্র গ্রহণের পূর্বে তাদের অর্জিত ডিগ্রির সমতা নিরূপণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সমতা নিরূপণ কমিটির আহবায়কের (ডিন, ফার্মেসী অনুষদ, মোকাররম হোসেন খন্দকার বিজ্ঞান ভবন সংলগ্ন) নিকট আবেদন করতে হবে।
এমফিল প্রোগ্রামের মেয়াদ দুই বছর। প্রথম বর্ষ কোর্স-ওয়ার্ক ও দ্বিতীয় বর্ষ থিসিস। প্রোগ্রামের রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ (পুনঃভর্তিসহ) সর্বোচ্চ ৩ বছর। তবে ৩ বছরের মধ্যে ডিগ্রি অর্জিত না হলে নির্ধারিত জরিমানা প্রদান সাপেক্ষে এবং পূর্বের রেজিস্ট্রেশন নম্বর বহাল রেখে ৬ মাস করে সর্বোচ্চ ১ বছর এমফিল প্রোগ্রামের রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা যাবে।
চাকরিরত প্রার্থীদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের অনাপত্তিসহ এক বছরের ছুটি নিয়ে এমফিল প্রোগ্রামে যোগদান করতে হবে এবং যোগদানপত্রের সাথে ছুটির অনুমোদনপত্র জমা দিতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ছুটি নেয়ার প্রয়োজন নেই, তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে অনুমতি নিয়ে গবেষণায় যোগদান করতে হবে।
ভর্তি ফিসের টাকা জমা দেয়ার ৩ মাসের মধ্যে ছুটির অনুমোদনপত্র জমা না দিলে রেজিস্ট্রেশনের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে না।
এমফিল প্রোগ্রামের গবেষকদের জন্য রিসার্চ মেথোডলজি কোর্স বাধ্যতামূলক থাকবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও ইনস্টিটিউট কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এমফিল প্রোগ্রামে রেজিস্ট্রেশনকৃত গবেষকদের জন্য সর্বমোট ২০০ নম্বরের দুই ইউনিট (প্রতি ইউনিট ১০০ নম্বর) অথবা চার ইউনিট (প্রতি ইউনিট ৫০ নম্বর) তত্ত্বীয় কোর্স প্রথম বর্ষে সম্পন্ন করা আবশ্যক। প্রতি কোর্সে ১০০ নম্বরের ইউনিটের জন্য ৪ ঘণ্টার এবং ৫০ নম্বরের ইউনিটের জন্য ২ ঘণ্টার পরীক্ষা দিতে হবে। এছাড়া ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষাও থাকবে। তত্ত্বীয় পরীক্ষায় পাস নম্বর গড়ে ৫০% এবং মৌখিক পরীক্ষার পাস নম্বর ৫০%।
এমফিল প্রথম পর্বের পরীক্ষা জুলাই থেকে জুন শিক্ষাবর্ষের জুনের মধ্যে শেষ করতে হবে।
দ্বিতীয় বর্ষে প্রত্যেক গবেষক সংশ্লিষ্ট অনুষদের শিক্ষকবৃন্দ ও গবেষকবৃন্দের উপস্থিতিতে তার গবেষণাকর্ম সম্পর্কে অন্তত দুইটি সেমিনার অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করবেন। সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যান/ইনস্টিটিউটের পরিচালকের মাধ্যমে উল্লিখিত সেমিনারের রিপোর্ট পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসে প্রেরণ করতে হবে।
একজন এমফিল গবেষক তার তত্ত্বাবধায়কের তত্ত্বাবধানে গবেষণার কাজ চালিয়ে যাবেন এবং প্রতি ৬ মাস অন্তর অগ্রগতির বিস্তারিত প্রতিবেদন নির্ধারিত ফর্মে তার তত্ত্বাবধায়কের সুপারিশসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যান/ইনস্টিটিউটের পরিচালকের অফিসে জমা দেবেন।
এমফিল প্রোগ্রামে প্রতি শিক্ষাবর্ষের আবেদনকারীদের জন্য এমফিল প্রথম পর্ব পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মেধা তালিকা তৈরি করা হবে এবং বৃত্তির নীতিমালা অনুযায়ী গবেষকদের মধ্য থেকে এক বছরের জন্য ৫০ জনকে বৃত্তি প্রদান করা হবে।
একজন শিক্ষক এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রাম মিলিয়ে এক সাথে অনধিক এককভাবে ৮ জন অথবা যৌথভাবে ১০ জন গবেষকের গবেষণা তত্ত্বাবধান করতে পারবেন। অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক এবং পিএইচডি ডিগ্রিধারী সহকারী অধ্যাপকবৃন্দ এমফিল প্রোগ্রামের গবেষকদের তত্ত্বাবধায়ক হতে পারবেন।
আবেদনকারী যে হলের ছাত্র/ছাত্রী হিসেবে এমফিল প্রোগ্রামে ভর্তি হতে ইচ্ছুক, সে হলের প্রাধ্যক্ষের স্বাক্ষর নেয়ার পর আবেদনপত্র সংশ্লিষ্ট বিভাগ/ইনস্টিটিউটে জমা দিতে হবে। উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে হলের ছাত্র/ছাত্রী হিসেবে স্নাতক সম্মান/স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন, সে হলের ছাত্র/ছাত্রী হিসেবে এমফিল প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পারবেন না।
এমফিল প্রোগ্রামের বিভিন্ন ফিসের হার হিসাব পরিচালকের অফিস থেকে (কক্ষ নং-১২৪) জানা যাবে। এই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত যোগ্যতা ও শর্ত পূরণকারী প্রার্থীরাই শুধুমাত্র এমফিল প্রোগ্রামে ভর্তির আবেদন করার যোগ্য বিবেচিত হবেন। পূর্ণাঙ্গ ও সঠিক তথ্য প্রদান না করলে ভর্তির আবেদন/ভর্তি বাতিল বলে গণ্য হবে।
ভর্তি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য ঢাবির ওয়েবসাইট (www.du.ac.bd) থেকে জানা যাবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর