
ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার কয়েকদিন পর প্রথমবারের মতো দেশটির পক্ষ থেকে স্থাপনাগুলোর গুরুতর ক্ষয়ক্ষতির কথা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, “আমাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা সামান্য নয়। ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থা এখনো ক্ষয়ক্ষতির ওপর নজর রাখছে।”
গত ২২ জুন মধ্যরাতে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ এবং ইস্ফাহান পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে একযোগে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন হামলা চালানো হয়। একইসঙ্গে, ইসরায়েলি বাহিনীও দফায় দফায় এসব স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়।
হামলার পরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো আমরা পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছি। ইরান এখন পারমাণবিক সক্ষমতা হারিয়েছে।”
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেন, “এই হামলার মাধ্যমে আমরা ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতাকে এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছি যা তাদের বছরের পর বছর পিছিয়ে দেবে।” তিনি আরও জানান, ইরান হামলার ভয়ে তাদের উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে বলেও গোয়েন্দা তথ্যে ইঙ্গিত মিলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র পরিচালক জন র্যাটক্লিফ বলেন, “মার্কিন হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এটি দেশটির আণবিক উন্নয়ন অন্তত পাঁচ থেকে সাত বছর পিছিয়ে দিয়েছে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, পারমাণবিক স্থাপনায় এই ধরনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ইরানকে প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপে উস্কে দিতে পারে, যা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে যুদ্ধাবস্থার জন্ম দিতে পারে। ইরান এখন পর্যন্ত সামরিকভাবে পাল্টা জবাব দেয়নি, তবে তেহরান জানিয়েছে, তারা কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষা স্তরে এর প্রতিক্রিয়া দেবে।
সর্বশেষ খবর