
জমি দখলের জন্য নিজেদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বাতিলের চক্রান্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন পঞ্চগড়ের দুই সহোদর। ভুক্তভোগী দুই ভাই ভবেন্দ্রনাথ রায় প্রধান ও বজেন্দ্রনাথ রায় প্রধানের দাবি, তাঁদের বাবার হত্যাকারীরাই এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
শুক্রবার (২৭ জুন) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এসব অভিযোগ করেন।
তাঁরা জানান, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার খারিজা ভাজনী গ্রামে তাঁদের পৈতৃক সম্পত্তি রয়েছে। তাঁদের বাবা জলধর রায় প্রধান ছিলেন ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। ১৯৭২ সালে সন্ত্রাসীরা তাঁকে হত্যা করে জমি দখলের উদ্দেশ্যে। এরপর থেকে পরিবারটি হুমকির মুখে জীবন যাপন করছে।
লিখিত বক্তব্যে ভবেন্দ্রনাথ রায় উল্লেখ করেন, ১৯৮১ সালে তাঁরা পৈতৃক সম্পত্তির ২.৮৮ একর জমির ওপর গাজুকাটি তফসিলি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন এবং তা বিদ্যালয়ের নামে দলিল করে দেন। এছাড়াও, তাঁদের পরিবার গাজুকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, মন্দির ও বাজার প্রতিষ্ঠার জন্য জমি দান করেছে।
তাঁদের অভিযোগ, স্থানীয় ভূমিদস্যু ফিরোজ শেখ, চাঁন মিয়া, আনোয়ার হোসেন হরমুজ, আমির আলী গার্ড ও ময়েজ উদ্দিনরা তাঁদের বাবার হত্যার সাথে জড়িত ছিল। বাবার হত্যার পর তাঁরা প্রাণ ভয়ে এলাকা ছাড়েন। পরবর্তীতে ফিরে এলেও হত্যাকারীদের সন্তানেরা তাঁদের হুমকি দেয় এবং মৃত দেখিয়ে ভুয়া দলিল তৈরি করে সম্পত্তি আত্মসাৎ করে।
তাঁরা আরও অভিযোগ করেন, স্থানীয় এক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান তাঁদের নাগরিক সনদ ও জন্মনিবন্ধন প্রদান না করে ভূমিদস্যুদের পক্ষ নিয়েছিলেন। পরে পার্শ্ববর্তী মাড়েয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাঁদের জাতীয় পরিচয়পত্রসহ নাগরিক সনদ প্রদান করেন। তবে জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার পর স্থানীয় সন্ত্রাসী মোহাম্মদ নাজমুল হোসাইন চৌধুরী বাপ্পি ও তাঁর সহযোগীরা কিছু গণমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেন।
ভবেন্দ্রনাথ রায় জানান, দলিল ও প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তাঁদের এনআইডি প্রাথমিকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে তাঁরা গত ২৫ জুন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেছেন। তাঁরা তাঁদের ভোটাধিকার ও বসবাসের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বাবা হত্যার সঠিক বিচার দাবি করেন।
সর্বশেষ খবর