
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় ইসকনের সাবেক সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে প্রধান আসামি করে ৩৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় এই অভিযোগপত্র জমা দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী। তিনি জানান, আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলার তদন্ত শেষে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ৩৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। চিন্ময় দাস এজাহারভুক্ত আসামি না হলেও গত ৫ মে পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।
রায়হানুল ওয়াজেদ আরও জানান, আলিফ হত্যা মামলায় এজাহারনামীয় ও তদন্তে প্রাপ্ত আসামি মোট ৪২ জন। এর মধ্যে এ পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ১৮ জন পলাতক রয়েছেন। আসামিদের মধ্যে ৪ জনকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি বড় সমাবেশ হয়। এর কয়েক দিন পর ৩১ অক্টোবর চিন্ময়ের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। ওই মামলায় আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়। একই বছরের ২২ নভেম্বর চিন্ময়ের নেতৃত্বে রংপুরে আরও একটি সমাবেশ হয়। রাষ্ট্রদ্রোহের সেই মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরদিন চট্টগ্রামের আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ওই দিন আদালত প্রাঙ্গণে তার জামিন ঘিরে সংঘর্ষে জড়ান চিন্ময়ের সমর্থকেরা। সংঘর্ষের সময় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক আইনজীবীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
পরবর্তীতে আইনজীবী আলিফ হত্যার ঘটনায় তার বাবা জামাল উদ্দিন ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আলিফ হত্যার আসামিদের মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে রিপন দাস জানান, তিনি আইনজীবীর ঘাড়ে বঁটি দিয়ে দুটি কোপ মারেন এবং চন্দন দাস কিরিচ দিয়ে কোপ মারেন। পরে তারা ১৫ থেকে ২০ জন মিলে রাস্তায় পড়ে থাকা ওই আইনজীবীকে লাঠি, বাটাম, ইট, কিরিচ ও বঁটি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর