
বগুড়ার শেরপুরে আবুল বাশার (২৮) নামে এক চীনফেরত যুবককে আটকের পর মারধরের অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের দাবি, বুধবার (২ জুলাই) রাতে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি বাশারকে আটক করে মারধর করে এবং পরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। তাঁদের অভিযোগ, বাশারকে জোর করে আওয়ামী লীগে যুক্ত করার চেষ্টা করা হয়, যা একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।
পুলিশ জানায়, আবুল বাশারকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বগুড়ার আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে বগুড়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আবুল বাশার শেরপুর পৌর শহরের নয়াপাড়া মহল্লার আব্দুল লতিফের ছেলে। তিনি ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে চীনে এমবিবিএস পড়তে যান এবং ২০২৪ সালের শুরুতে স্নাতক শেষ করেন। তাঁর স্ত্রী মোছাঃ হুমায়রা হাফসাও চীনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত। তারা গত ২২ জুন ছুটিতে দেশে ফেরেন।
হুমায়রা হাফসা জানান, বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি মার্কেটের সামনে থেকে স্থানীয় বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত কিছু ব্যক্তি তাঁর স্বামীকে আটক করে। পরে শহরের কলেজ রোড এলাকার একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে পুলিশে দেওয়া হয়।
হুমায়রা আরও বলেন, আটকের কারণ জানতে থানায় গেলে পুলিশ কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। পুলিশ জানায়, তাঁর নামে কোনো মামলা নেই। হুমায়রার ধারণা, গত বছরের ৫ আগস্টের পর শেরপুর থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে হওয়া তিনটি মামলায় তাঁর স্বামীকে জড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ওই সময় তাঁর স্বামী দেশে ছিলেন না। তাই কোনো নির্দিষ্ট মামলায় গ্রেপ্তার দেখাতে না পেরে ৫৪ ধারায় আটক দেখানো হয়েছে।
হুমায়রা অভিযোগ করেন, তাঁদের পরিবার কখনও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল না। তাঁর স্বামীকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার চেষ্টা চলছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজিদ হাসান সিদ্দিকী জানান, বুধবার রাত পৌনে ৯টার দিকে আবুল বাশারকে থানা পুলিশের মাধ্যমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে আনা হয়। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শেরপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাবলু বলেন, তিনি ওই ব্যক্তিকে আটক ও মারধরের বিষয়ে কিছুই জানেন না।
শেরপুর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) জয়নুল আবেদীন জানান, আবুল বাশারের বিদেশ গমনের তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে। আপাতত ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর