
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বারেশ্বর ফরিদ উদ্দিন ডাক্তার মার্কেটে শুক্রবার রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় ১০টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে এবং কোটি টাকারও বেশি মূল্যের মালামালের ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের ধারণা, রাত সাড়ে ৯টার দিকে মার্কেটের মাহবুবের ফলের দোকান ও আবু খায়েরের গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যে আগুন আশপাশের দোকানগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে বুড়িচং ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট এবং স্থানীয় লোকজন প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আবু খায়ের ট্রেডার্সের গ্যাস সিলিন্ডার, চুলা ও নগদ টাকা মিলিয়ে প্রায় ১৫ লাখ টাকা, মাসুদ স্টোরের প্রায় ১৫ লাখ টাকা, মহসিন ট্রেডার্সের ১৫০ বস্তা চাল ও সারসহ প্রায় ৭ লাখ টাকা, সুমন স্টোরের ক্রোকারিজ ও মুদি মালামাল মিলিয়ে ১৫ লাখ টাকা, কামরুল হাসানের মেকানিক্যাল ফ্রিজ মেরামত দোকানের ৩ লাখ টাকা, হাসান ভূঁইয়া ইলেকট্রনিক্সের ১০ লাখ টাকা, চন্দন শীলের সেলুনের ৩ লাখ টাকা, মনির হোসেনের হোমিওপ্যাথিক দোকানের ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, প্রতিবন্ধী মিজান ও বজলু মিয়ার ইলেকট্রনিক্স দোকানের প্রায় ৫ লাখ টাকা, মারিয়া খেলা ঘর এন্ড ফ্যাশনের ৬ লাখ টাকা এবং ইকবাল কনফেকশনারীসহ অন্যান্য দোকানে প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী গোলাম কিবরিয়া, কাউছার নয়নসহ অনেকে জানান, অগ্নিকাণ্ডে গ্যাসের দোকান, পাইকারি চাল ও সারের দোকান, খেলার সামগ্রী, ক্রোকারিজ, ইলেকট্রনিক্সসহ অন্তত ১০টি দোকান পুড়ে গেছে।
ফল দোকানদার মাহবুব বলেন, “ঘটনার সময় আমি কুমিল্লা শহরে ছিলাম। খবর পেয়ে দ্রুত এসে দেখি আমার লক্ষাধিক টাকার মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমরা তিন ভাই ২৫ বছর ধরে এই মার্কেটে ব্যবসা করছি।”
প্রতিবন্ধী মিজান কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, “আমার দুইটি পা নেই, ইলেকট্রনিক্স মেরামত করে কোনমতে সংসার চালাতাম। এখন দোকানটিও শেষ। স্ত্রী আর দুই মেয়ে নিয়ে বাঁচব কিভাবে, কিছুই বুঝতে পারছি না। সরকারের সহযোগিতা দরকার।”
বুড়িচং ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মকর্তা কফিল উদ্দিন জানান, “তিনটি ইউনিট নিয়ে দ্রুত আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়। আগুনে ১০টি দোকান সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক হিসাব পরে জানানো যাবে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হোসেন বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলোর তালিকা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে পাঠানো হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহযোগিতার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর