
শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড় থেকে একটি পূর্ণবয়স্ক মাদি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার সকালে উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নের দাওধারা কাটাবাড়ি এলাকার পাহাড়ের ঢাল থেকে হাতিটি উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতে ৩০-৪০টি বন্যহাতির একটি দল দাওধারা কাটাবাড়ি পাহাড়ি এলাকায় তাণ্ডব চালায়। তারা বাঁশঝাড়ের বাঁশের কুড়ুল খায় এবং রোপিত আকাশমনি গাছের ছাল-বাকল ভেঙে ফেলে। গ্রামবাসীরা প্রতিরোধের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। শনিবার ভোররাতে স্থানীয়রা একটি মাদি হাতিকে পাহাড়ের ঢালে পড়ে থাকতে দেখেন এবং অন্য হাতিগুলো সেটিকে ঘিরে রাখে। পরে লোকজন জড়ো হলে অন্য হাতিগুলো গভীর জঙ্গলে চলে যায়।
স্থানীয় গারো আদিবাসী ডিলি সাংমা জানান, সকালে তিনি জানতে পারেন একটি মৃত বন্যহাতি পড়ে আছে। তবে কীভাবে হাতিটি মারা গেছে, তা তিনি জানেন না। খবর পেয়ে বন বিভাগের লোকজন পশু চিকিৎসকসহ ঘটনাস্থলে আসেন।
বন বিভাগের ওয়াইল্ডলাইফ রেঞ্জার মো. আব্দুল্লাহ আল আমীন জানান, মৃত হাতিটি পূর্ণবয়স্ক মাদি হাতি। প্রাথমিকভাবে হাতির শুঁড়ে সামান্য পোড়া দাগ দেখা গেছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. দেওয়ান আলী জানান, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে যান এবং বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছেন। ময়নাতদন্তের পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিকে, নালিতাবাড়ীর গারো পাহাড়ে বন্যহাতি মারা যাওয়ার খবর পেয়ে ময়মনসিংহ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম, শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান, সহকারী বন সংরক্ষক মো. সাদেকুল ইসলাম, বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুমন সরকারসহ বন বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, বন্যহাতি ও মানুষের দ্বন্দ্বে উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই দ্বন্দ্ব নিরসনের লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া, হাতি উপদ্রুত এলাকায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হবে, যিনি নিয়মিত খোঁজখবর রাখবেন। এতে মানুষের জানমাল রক্ষা পাবে এবং হাতিও নিরাপদে থাকবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর