
কুমির দেখলে যেখানে মানুষ সাধারণত দূরে পালায়, সেখানে বাগেরহাটের মেহেদী হাসান তপু নামের এক যুবক কুমিরের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুমিরের সঙ্গে তপুর খুনসুটির ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে তা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং দ্রুত ভাইরাল হয়। ঘটনাটি বাগেরহাটের ঐতিহাসিক খানজাহান আলী (র:) মাজারের দিঘিতে থাকা কুমিরকে কেন্দ্র করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তপু ছোটবেলা থেকেই মাজার এলাকায় বড় হয়েছেন এবং কুমিরের প্রতি তার বিশেষ টান রয়েছে। তিনি প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে মাজারে গিয়ে ‘ধলাপাহাড়’ নামে পরিচিত কুমিরগুলোকে ডাকেন। তপুর ডাক শুনলেই কুমিরগুলো ভেসে ওঠে এবং তার হাত থেকে খাবার খায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, তপু কুমিরটিকে শান্তভাবে স্পর্শ করছেন এবং থামতে ও চলতে বলছেন। কুমিরটিও তার কথা অনুযায়ী চলছে। অনেকে তপুর এই কাজের প্রশংসা করলেও কেউ কেউ বিষয়টিকে বিপজ্জনক বলে সমালোচনা করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা রহিম উদ্দিন জানান, তিনি ছোটবেলা থেকে দিঘির কুমির দেখছেন, তবে কখনো ভাবেননি কেউ এত কাছ থেকে কুমিরের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে পারবে। তুষার ফকির বলেন, তপুর সাহস ও ভালোবাসা দেখে তারা গর্বিত।
খুলনা থেকে আসা খোকন খন্দকার জানান, তিনি ইন্টারনেটে ভিডিওটি দেখে কৌতুহল নিয়ে এসেছেন এবং নিজের চোখে দেখে বিশ্বাস করেছেন যে প্রাণীর সঙ্গেও এমন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হতে পারে।
মেহেদী হাসান তপু জানান, তিনি ছোটবেলা থেকেই খানজাহান আলী (র:) মাজারে কুমির দেখে আসছেন এবং এভাবেই কুমিরের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। তিনি কুমিরটিকে বহুবার দিঘীর বাইরে থেকে ধরে এনেছেন।
খানজাহান আলী (র:) মাজারের প্রধান খাদেম ফকির তরিকুল ইসলাম বলেন, তপুর কুমিরের প্রতি টান ছোটবেলা থেকেই। ২০০৫ সালে ভারত থেকে আনা ছয়টি কুমিরের মধ্যে এখন এই ‘ধলাপাহাড়’ নামের মাদি কুমিরটিই অবশিষ্ট আছে। ২০২৩ সালে ‘কালাপাহাড়’ মারা যাওয়ার পর থেকে কুমিরটির সঙ্গে তপুর বন্ধুত্ব আরও গভীর হয়েছে। এই বন্ধুত্বের কারণে অনেক পর্যটক দিঘীর পাশে ভিড় করছেন।
সর্বশেষ খবর