
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোট কারচুপি হলে শুধু কেন্দ্র নয়, পুরো আসনের নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা পেতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল বৃহস্পতিবার অষ্টম কমিশন সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এ তথ্য জানান।
আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, কোনো নির্দিষ্ট আসনের নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার জন্য তারা আবেদন করেছেন। আগে পুরো আসনের নির্বাচন বন্ধের ক্ষমতা কমিশনের ছিল, যা পরবর্তীতে বাদ দেওয়া হয়। বর্তমানে কমিশনের কেন্দ্র বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কেন্দ্র বাতিলের সক্ষমতা ইসির থাকলেও পুরো নির্বাচনী এলাকা বন্ধ করার ক্ষমতা নেই। সেই ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে এবং কমিশন আশা করে এটি ফেরত পাওয়া যাবে।
হলফনামায় নতুন তথ্য সংযুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় হলফনামায় কিছু নতুন বিষয় যুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এক্ষেত্রে ফৌজদারি মামলার বিবরণ শুধু ২০ বছর নয়, বরং আজীবনের তথ্য হলফনামায় যুক্ত করতে হবে।
আগামী সপ্তাহে সম্পূরক ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন করে প্রায় ৪৪ লাখ ৬ হাজার ৬০২ জন ভোটার নিবন্ধিত হয়েছেন। এছাড়া ২১ লাখ ৩২ হাজার ৫৯০ জন মৃত ভোটারের তথ্য পাওয়া গেছে।
ইসি সচিবালয় আইন সংশোধন নিয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সচিব ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের নিয়োগের জন্য নির্বাচন কমিশন সার্ভিস নামে একটি সার্ভিস হবে। সংস্কার কমিশনও এ ধরনের প্রস্তাব করেছিল। এই সার্ভিস চালু না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যমান বিধি মেনেই কার্যক্রম চলবে। এছাড়া ১৯৯১ সালের নির্বাচন কর্মকর্তা বিশেষ আইনে ছোট ছোট সংশোধন প্রস্তাব করা হয়েছে। ইসি কর্মকর্তাদের আর্থিক ক্ষমতা পুনর্বিন্যাসের বিষয়েও কিছু সংশোধন প্রস্তাব আনা হয়েছে।
সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ২২১টি আসনের বিষয়ে কোনো আপত্তি আসেনি। আশা করা যায়, আগামী সপ্তাহে এটি প্রকাশ করা হবে। ঢাকায় আসন সংখ্যা খুব বেশি কমবে না। জনসংখ্যার ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি ভোটার সংখ্যার সমতা নিশ্চিত করে আসন বিন্যাস করা হবে।
নতুন দল নিবন্ধনের আবেদন যাচাই-বাছাই শুরু হয়েছে। যেসব আবেদনে সামান্য ত্রুটি রয়েছে, তাদের তথ্য পূরণের জন্য ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। এবার ১৪৪টি দল নিবন্ধনের জন্য ১৪৭টি আবেদন করেছে।
প্রতীকের তালিকা থেকে শাপলা বাদ দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, শাপলা প্রতীক চেয়ে নাগরিক ঐক্য ও এনসিপি আবেদন করেছিল। তবে ইসি সার্বিক বিবেচনায় শাপলা তালিকাভুক্ত করেনি।
প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রবাসীরা এবার পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন। সময় বাঁচাতে ব্যালট পেপার বিশেষ ব্যবস্থায় প্রিন্ট হওয়ার পর ভোটারের কাছে পাঠানো হবে। এক্ষেত্রে আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেখানে প্রবাসীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
সব নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার বাতিল করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইভিএম ভবিষ্যতে কোনো নির্বাচনে ব্যবহার করা হবে না।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর