
শেরপুর উপজেলার ভীমজানি উচ্চ বিদ্যালয়ে জিম নামের এক কিশোরের বিরুদ্ধে ছাত্র নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী স্বপনকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।
অভিযোগে জানা যায়, জিম ও তার কয়েকজন সহযোগী—সিহাব, ইমরান ও মনির—পরিকল্পিতভাবে স্বপনকে মারধর করে এবং সেই দৃশ্য ভিডিও করে। ভুক্তভোগী স্বপন জানায়, গত রবিবার পরীক্ষার পর তাকে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়, তবে এর কারণ সে জানে না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জিম দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। শিক্ষার্থীদের মারধর, হুমকি এবং দেশীয় অস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি দেখানোর মতো অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অষ্টম শ্রেণির ছাত্র বিদ্যুৎ জানায়, জিমের ভয়ে সে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, জিম প্রায়ই বার্মিজ চাকু নিয়ে স্কুলে আসে এবং সামান্য অজুহাতে শিক্ষার্থীদের হুমকি দেয়।
স্থানীয় যুবক হৃদয় জানান, জিম শুধু স্কুলেই নয়, এলাকার বাইরেও বিপজ্জনক। কিছুদিন আগে সে তার এক বন্ধুকে ছুরিকাঘাত করেছিল। এছাড়া, সম্প্রতি চুরি-কাটাকাটির একটি ঘটনায় আহত এক কিশোর হাসপাতালে ভর্তি আছে এবং সেই ঘটনায়ও জিম জড়িত।
তবে অভিযুক্ত জিম দাবি করে, স্বপন তার ভাতিজিকে উত্ত্যক্ত করায় সে তাকে চড়-থাপ্পড় মেরেছে। চাকু নিয়ে ঘোরার অভিযোগ অস্বীকার করে সে।
ভীমজানি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক একেএম জহিরুল ইসলাম জানান, জিমের কারণে বিদ্যালয়ে একের পর এক বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। একাধিকবার সতর্ক করার পরেও কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় তাকে টিসি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু স্থানীয়ভাবে বাধার কারণে তা কার্যকর করা যায়নি।
এলাকার সচেতন মহল ও অভিভাবকরা দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, এখনই কঠোর পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে এই কিশোর গ্যাং আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ খান জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত এবং দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব শাহরিন জানান, ভিডিওটি তিনি দেখেছেন এবং তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সর্বশেষ খবর