
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (কুষ্টিয়া): ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ফুটবল খেলা নিয়ে সিনিয়র ও জুনিয়র শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারির সময় ভিডিও করতে গেলে তিন ক্যাম্পাস সাংবাদিক হামলার শিকার হয়েছেন। শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
আহত সাংবাদিকরা হলেন আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও দৈনিক আমাদের বার্তার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক আরিফ বিল্লাহ, একই বিভাগের রবিউল আলম (দৈনিক আজকের খবর) এবং সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ও বার্তা ২৪-এর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নুর-এ-আলম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্তঃসেশন ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এসময় সাংবাদিক আরিফ বিল্লাহ ভিডিও ধারণ করতে গেলে একই বিভাগের শিক্ষার্থী আফসানা পারভিন টিনা তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। এরপর কয়েকজন শিক্ষার্থী আরিফ বিল্লাহকে এলোপাথাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মারতে শুরু করেন। অন্য দুই সাংবাদিক নুর এ আলম ও রবিউল আলম এগিয়ে এলে তাদেরকেও মারধর করা হয়।
আরিফ বিল্লাহ জানান, “সংবাদ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ভিডিও করতে গেলে কয়েকজন শিক্ষার্থী আমার মোবাইল কেড়ে নেয় এবং মারধর করে। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরেও তারা হামলা চালায়।”
নুর-এ-আলম বলেন, “আরিফ বিল্লাহ মারধরের শিকার হওয়ার সময় ভিডিও করতে গেলে আমাকেও মারধর করা হয়। আমি হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
রবিউল আলম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছালে কয়েকজন আমার মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম আমার তলপেটে লাথি মারে।”
এ ঘটনায় অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের নাহিদ হাসান, সাব্বির, আফসানা পারভিন টিনা, মিনহাজ, সৌরভ দত্ত ও পান্না এবং ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অজিল, সাইফুল, রাকিব, মশিউর রহমান রিওন ও হৃদয়সহ ২০-২৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন, প্রক্টরের সামনে তাদের বিভাগের এক ছাত্রীকে সাংবাদিকরা মারধর করেছে। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. সাহেদ আহম্মেদ জানান, ছাত্রীর শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে তিনি আতঙ্কগ্রস্ত ছিলেন।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি ছাত্রীকে মারধরের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী বলেন, “বিষয়টি প্রশাসনকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন আচরণ বরদাশত করা হবে না।”
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মো. নসরুল্লাহ বলেন, “আমি ঘটনাটি প্রক্টরের কাছে শুনব এবং ক্যাম্পাসে ফিরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর