
কক্সবাজার সদর উপজেলার পূর্ব মুক্তারকুল এলাকায় বাঁকখালী নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। শনিবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যায় চালানো এই অভিযানে একটি ড্রেজার মেশিন ও বিপুল পরিমাণ পাইপলাইন ধ্বংস করা হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে কতিপয় ব্যক্তি সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছিলেন। এতে নদীপাড়ের স্কুল, ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও বেড়িবাঁধ চরম ঝুঁকির মুখে পড়ে।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক রশিদ আহমদ এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বেদারুল আলম। স্থানীয়দের ভাষ্য, তারা প্রভাব খাটিয়ে এই অবৈধ কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন সুলতানা। তিনি জানান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরীর নির্দেশে এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানের খবর পেয়ে ড্রেজার মালিকরা পালিয়ে যান।
প্রশাসন ঘটনাস্থলটি লাল পতাকা দিয়ে সিলগালা করে দিয়েছে।
স্থানীয়রা আরও জানান, শুধু মুক্তারকুল নয়, ছমুদা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা, সুইসগেট এবং ঘাটকুলিয়া পাড়ার রাবার ড্যামসংলগ্ন এলাকাতেও একটি সংঘবদ্ধ চক্র দিনরাত অবাধে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। এর ফলে বাঁকখালীর দুই তীরে নদীভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে এবং বেশ কয়েকটি এলাকার ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় কৃষক জানান, ড্রেজারের কারণে তাদের জমিজমা নদীগর্ভে চলে গেছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন সুলতানা জানান, অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে স্কুল, রাস্তা, ব্রিজসহ নানা স্থাপনা ঝুঁকির মুখে পড়ছে। তিনি আরও জানান, এর আগেও একাধিকবার অভিযান চালানো হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও অবৈধ ড্রেজার দেখলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নদী রক্ষা ও জনস্বার্থে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অবৈধ ড্রেজার সিন্ডিকেট অত্যন্ত শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী হওয়ায় সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে ভয় পায়। তারা আশঙ্কা করছেন, এখনই কঠোর ব্যবস্থা না নিলে বর্ষা শেষে নদীর মানচিত্র বদলে যেতে পারে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর