
পরিবারের ছোট মেয়েকে হারিয়ে নির্বাক হয়ে পড়েছেন বাবা সিদ্দিক আহমেদ। মেয়ে মাসুকা বেগম নিপু (৩৭) আট বছর আগে ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ইংরেজি বিভাগের প্রাথমিক শাখায় শিক্ষকতা শুরু করেন।
এরপর থেকে বাবার পাশে থেকে অনেক দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন তিনি। তবে গতকাল সোমবার মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান এই শিক্ষিকা।
শিক্ষিকা মাসুকার মৃত্যুর খবরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তার অকাল মৃত্যুতে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। মাসুকার পৈতৃক নিবাস ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার চিলোকুট গ্রামে হলেও তিনি শহরের মেড্ডা এলাকায় বসবাস করতেন।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, অনলাইনে দুর্ঘটনার খবর দেখে তাদের এক আত্মীয় চিকিৎসকের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হন। এরপর রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে যোগাযোগ করে মাসুকার মৃত্যুর সংবাদ তারা জানতে পারেন।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেলে তার মরদেহ নিয়ে আসা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে। বাবা অসুস্থ এবং বড় ভাই বিদেশে থাকায় মরদেহটি আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে বড় বোনের বাড়িতে আনা হয়। মরদেহ পৌঁছানোর পর সেখানে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বাদ আসর জানাজা শেষে তাকে সোহাগপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নিহতের বড় বোনের মেয়ে নিধি বলেন, ‘খালামনি আমাদের অনেক আদর করতেন। কখনো ধমক দিয়ে কথা বলেননি। দুর্ঘটনার খবর জানার পর পর্যন্ত আমরা দোয়া করছিলাম—আল্লাহ যেন খালামনিকে বাঁচিয়ে রাখেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জানতে পারি, তিনি আর নেই। আল্লাহ যেন তাকে জান্নাত নসিব করেন।’
নিহতের বাবা বলেন, ‘আমার দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে মাসুকা ছিল সবচেয়ে ছোট। তার মা মারা গেছেন ১৫ বছর আগে। মা মারা যাওয়ার পর থেকে মেয়েটাই আমার যত্ন নিত। তাকে বিয়ে দিতে পারিনি। এখন আমি এই শোক কীভাবে সইব?’
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর