
পাবনায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক শহরের বড় বাজারের ব্যবসায়ীদের নানা সময়ে বাজার তদারকি ও অভিযানের নামে হয়রানি ও আর্থিক জরিমানা করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা। এছাড়া, পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সকল মুদিখানা দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুরে পাবনা বড় বাজারের খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা দোকান বন্ধ করে এই প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিল করেন।
বিক্ষোভ মিছিলটি বড় বাজারের দই বাজার মোড় থেকে বের হয়ে শহরের ইন্দারা মোড় হয়ে আব্দুল হামিদ সড়কে প্রেসক্লাবের সামনে পথসভায় মিলিত হয়।
এ সময় বক্তব্য রাখেন, সমিতির সভাপতি শাহ আলম মুরাদ, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান নাছিম, সহ-সভাপতি ওয়াসিকুজ্জামান খান, যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, ইকবাল হোসেন, কামরুল ইসলাম প্রমুখ।
পথসভায় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই পাবনা জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল কিছু কর্মকর্তাসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাজার তদারকির নামে ব্যবসায়ীদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন। তুচ্ছ ভুলের কারণে অযৌক্তিকভাবে আর্থিক জরিমানা আদায় করছেন। লাইসেন্স বাতিলসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন তারা।
ব্যবসায়ীরা বলেন, বাজার অভিযানে আসা প্রশাসনের কর্মকর্তারা অন্যায়ভাবে প্রতিষ্ঠান না বুঝেই লাখ টাকা জরিমানা আদায় করছেন। এটি অন্যায়ভাবে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে ব্যবসায়ীদের উপর। তাই সম্প্রতি বাজার তদারকি ও অভিযানে আসা প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের দ্রুত অপসারণ করে ব্যবসায়ীদের সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টির দাবি জানান তারা।
একইসঙ্গে অযৌক্তিকভাবে আদায় করা জরিমানার অর্থ ফেরতেরও দাবি করেন ব্যবসায়ীরা। যদি এই দাবি মেনে নেওয়া না হয়, তাহলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তারা। পথসভা শেষে মিছিল করে বড় বাজারে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ব্যবসায়ীরা।
বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শাহ আলম মুরাদ বলেন, "সম্প্রতি বেশকিছু দোকানে অভিযান চালিয়ে অন্যায়ভাবে জরিমানা করেন ম্যাজিস্ট্রেট। তার প্রতিবাদে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত পাবনার বড় বাজারের মুদিখানার সব দোকান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে মাছ বাজার ও সবজির বাজারসহ অন্যান্য দোকানপাট খোলা আছে।"
এ বিষয়ে পাবনার জেলা প্রশাসক মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, "বাজারে ঢুকতে হয় নাক ধরে। ময়লা-আবর্জনায় একাকার। ব্যবসায়ী সমিতির কি দায়িত্ব নেই এগুলো দেখার? আবার পণ্য কোথা থেকে আনছে তার ভাউচার নেই, মূল্য তালিকা টানান না, ইচ্ছামতো দামে পণ্য বিক্রি করে— এগুলো দেখতে গেলে প্রশাসন খারাপ হয়ে যায় তাদের কাছে।"
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, "বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে প্রতিদিন বাজার মনিটরিং করে রিপোর্ট দিতে হয় আমাদের। এখন সেটা যদি না করি তাহলে এর জবাবদিহি কিভাবে করবো সরকারের কাছে? বাজার মনিটরিং-এ গেলে জরিমানা করলে ব্যবসায়ীরা ম্যাজিস্ট্রেটকে পর্যন্ত ঘেরাও করে আটকে রাখে। এমন অন্যায় কি মেনে নেওয়া যায়? ব্যবসায়ীরা নিয়মনীতি মেনে ব্যবসা করবেন। কিছু হলেই দোকান বন্ধ করে একজোট হয়ে মিছিল করলে কি সমাধান হবে? ব্যবসায়ীদের আন্তরিকতা নিয়ে ব্যবসা করার আহ্বান জানান তিনি।"
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর