
অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তার একটি ফেসবুক পোস্ট এডিট করে ‘নূতন দলের মহারথী’র জায়গায় লিখেছেন ‘বিভিন্ন দলের মহারথী’। সেইসঙ্গে ‘একটা সার্কেলে প্রায় সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত’ —এই অংশটি মুছে ফেলেছেন তিনি।
সোমবার দিবাগত রাত ২টা ৫১ মিনিটে ফেসবুকে পোস্টটি করেন মাহফুজ। পরে রাত ৪টা ২৮ মিনিটে সেটি এডিট করেন।
প্রথম পোস্টে মাহফুজ আলম ‘তদবির চেষ্টা’র কথা উল্লেখ করে দুর্নীতির প্রস্তাব পাওয়ার একটি ঘটনা তুলে ধরেন।
তিনি লেখেন, ‘তদবিরের কথা উঠলো যখন, একটা ঘটনা বলি। আমাদের এক বন্ধু একজন ব্যক্তিকে আমার ভাইয়ার সঙ্গে দেখা করায়। বিটিভির একটা টেন্ডারের কাজ করে দিলে তারা পার্সেন্টেজ দেবে এবং জুলাই নিয়ে কয়েকটা দেশে প্রোগ্রামের জন্য হেল্প করবে। আমি জানার পর এটা নিষেধ করে দেই। সদুদ্দেশ্যে হলেও রাষ্ট্রের আমানতের খেয়ানত করা যাবে না। পরবর্তীতে সে টেন্ডারের কাজও স্থগিত হয়।’
কথোপকথন রেকর্ড করে ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ করে তিনি আরও লেখেন, ‘সে ব্যক্তি কনভার্সেশন রেকর্ড করে একজন সাংবাদিককে পাঠায়। সে সাংবাদিক যোগাযোগ করলে আমি বলে দেই, ভাই আমরা এ কাজ করতে দেইনি। আর ঐ লোক ফাঁসানোর উদ্দেশ্যেই জুলাইয়ের প্রোগ্রামের কথা বলে এ কাজ করেছে। উনি আমার কথা বিশ্বাস করে আর রেকর্ডটি পাবলিক করেননি।’
এরপরই নিজের পোস্টে তিনি দুর্নীতির বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়ে লেখেন, ‘আজকাল অনেকের লেজকাটা যাচ্ছে বলে, আমার বিরুদ্ধে লেগেছেন। নূতন একটি দলের কয়েকজন মহারথী এতে জড়িত। সবই প্রকাশ পাবে। একটা সার্কেলে প্রায় সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত কিন্তু একজন কোনো টাকা ধরছেন না, এটা কার সহ্য হবে!’
পোস্টের শেষে ‘পুনশ্চ’ দিয়ে তিনি যোগ করেন, আমার নিকৃষ্ট শত্রুরাও গত ১২ মাসে আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ করলেও দুর্নীতি বা আর্থিক অসঙ্গতির অভিযোগ করেনি। একটি নূতন দলের মহারথীদের অনেক অসুবিধা হচ্ছে তাতে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব পবিত্র আমানত। হাজার কোটি টাকার চাইতেও ইজ্জত ও রাষ্ট্রের আমানত আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এই পোস্টটি করার দেড় ঘণ্টা পর তিনি এটি এডিট করেন। এডিট করা পোস্টে তিনি ‘নূতন দলের মহারথী’র জায়গায় ‘বিভিন্ন দলের মহারথীদের’ কথা উল্লেখ করেন এবং ‘একটা সার্কেলে প্রায় সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত কিন্তু একজন কোন টাকা ধরছেন না, এটা কার সহ্য হবে!’ এই অংশটি ফেলে দেন।
এডিট করা সেই পোস্টের শেষাংশে বিশেষ দ্রষ্টব্যে তিনি আরও লিখেছেন, কয়েকটা বাক্য নিয়ে অযথাই জলঘোলা হচ্ছে, তাই এডিট করে দিলাম। জুলাই কতিপয় লোকের কাছে পলিটিকাল মবিলিটির ল্যডার। একটা না কয়েকটা দলের মহারথীরাই আমার/ আমাদের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। কিন্তু, সবার এখন গুজববাজ আর সুবিধাবাদীর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকা দরকার।
মাহফুজের এই পোস্ট সংশোধন নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই আলোচনা-সমালোচনা করছেন। তার এই পোস্ট সংশোধন নিয়ে আপ বাংলাদেশের প্রধান উদ্যাক্তা আলী আহসান জুনায়েদ নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ‘তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম দুর্নীতির অস্তিত্ব জানেন। তিনি জানেন কারা, কোন দল, কোন মহারথী এই ঘৃণ্য খেলায় জড়িত।’
জুনায়েদ লেখেন, ‘আমরা জানতে চাই, সেই নতুন দলটি কারা? কোন সার্কেল? কারা ‘গণ-অভ্যুত্থান’ নাম নিয়ে শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করছে? উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে অনুরোধ করবো, দুর্নীতি দমন কমিশনকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন। দুর্নীতির তথ্য জেনেও চুপ থাকার অপরাধ করবেন না।’
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর
জাতীয় এর সর্বশেষ খবর