• ঢাকা
  • ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৩৭ সেকেন্ড পূর্বে
এম. সুরুজ্জামান
শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ৩১ জুলাই, ২০২৫, ০৭:৪৯ বিকাল

শেরপুরের ঐতিহাসিক ‘পৌনে তিন আনি’ জমিদারবাড়ি রক্ষায় কার্যকরী উদ্যোগ নেই

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

শেরপুর শহরের বুকজুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা পৌনে তিন আনি জমিদার বাড়িটি একসময়ের ঐশ্বর্যময় জমিদার ইতিহাসের জীবন্ত নিদর্শন। উনিশ শতকে নির্মিত এই স্থাপত্যটি আজ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ক্রমেই জীর্ণ হয়ে পড়ছে। স্থানীয়দের ভাষায়, এটি শুধু একটি বাড়ি নয়, এটি একটি কালের দলিল। যা আজ হারিয়ে যাওয়ার পথে।

ঐতিহাসিক তথ্যে জানা গেছে, কিশোরী মোহন চৌধুরীর সময়কালে এই রাজবাড়ির নির্মাণ শুরু হয়। পরবর্তীতে সত্যেন্দ্র মোহন ও জ্ঞানেন্দ্র মোহন চৌধুরী দুই ভাই এ বাড়িকে পরিপূর্ণতা দেন। দুই ভাইয়ের একাধারে ছিল শিক্ষা, রুচিশীলতা ও সৌন্দর্যপ্রেম। তাদের হাতে গড়া বাগান, মন্দির, রংমহল, শীষমহল ও বিশাল পুকুরগুলোর স্থাপত্যরীতি ও কারুকাজ এখনো মুগ্ধ করে দর্শকদের।

জমিদারবাড়ির স্থাপত্যে গ্রিক শৈলীর প্রভাব লক্ষণীয়। চুন-সুড়কির নিপুণ ব্যবহার, স্তম্ভে খোদাই করা কারুকাজ। মার্বেল টাইলসে মোড়ানো সিঁড়ি, সবকিছুই ইতিহাস ও সৌন্দর্যের মেলবন্ধন। বাড়ির দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত রংমহল ছিল নাচ-গানের মূল কেন্দ্র। আর মূল ফটকের বিশাল প্রবেশপথ, শানবাঁধানো ঘাট ও পাশের পুকুর এ বাড়িকে পরিণত করেছে একটি আকর্ষণীয় ও পূর্ণাঙ্গ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানে।

শেরপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অফিস সহায়ক মো. ফজলুল করিম জানান, “আমরা চেষ্টা করছি এই পুরাতন ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে। কিন্তু বাইরে থেকে কিছু লোকজন প্রবেশ করে স্মৃতিচিহ্ন গুলো নষ্ট করছে, এমনকি চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে।”

ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কৃষিবিদ মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমরা বহুবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে জানিয়েছি। কিন্তু যেহেতু এটি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের আওতায় রয়েছে, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ সরাসরি সংস্কারে এগোতে পারছে না। এ জটিলতা দূর না হলে কার্যকর সংরক্ষণ সম্ভব নয়। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।”

প্রত্নতত্ত্ববিদদের মতে, বাড়িটির ডিজিটাল নথিভুক্তি, জরিপ এবং সংস্কার এখনই শুরু করা দরকার। স্থাপত্যের মূল্যায়ন করে কাঠামোগত স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে একে জাতীয় ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা দেওয়া সম্ভব। বাড়ির একাংশ জাদুঘর হিসেবে ব্যবহার করে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করাও বাস্তবসম্মত প্রস্তাব।

স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা চাইলে এটি শেরপুরের অন্যতম পর্যটন স্পট হতে পারে। বাড়িটির চারপাশে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, নিরাপত্তা এবং ইতিহাস বিষয়ক তথ্যচিত্র সংযোজন করলে দর্শনার্থীরা আরও আগ্রহী হবেন। শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের ঐতিহ্য সংরক্ষণে সম্পৃক্ত করাও সময়ের দাবি।

শেরপুরবাসীর প্রাণের এই জমিদারবাড়ি এখন নিঃশব্দে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এর সৌন্দর্য, কারুকার্য ও অতীত জৌলুস এক অনন্য সম্পদ। যা হারিয়ে গেলে তা হবে শুধুই শেরপুর নয়, জাতীয় ঐতিহ্যের এক অপূরণীয় ক্ষতি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]