
বিএনপির কেন্দ্রীয় অর্থনীতিবিষয়ক সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই যে ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন, সেখানেই সকল সংস্কারের বিষয়ে উল্লেখ আছে। আপনারা শুধু একটি সংস্কার করুন, যা হচ্ছে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সংস্কার। তখন বাংলাদেশের জনগণ যাকে ইচ্ছে তাকে ভোট দেবে এবং তাদের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধি এসে সকল সংস্কার করবে।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিল্পকলা একাডেমিতে 'সাংবাদিক ইউনিয়ন ব্রাহ্মণবাড়িয়া' আয়োজিত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শোক ও বিজয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সাংবাদিক ইউনিয়ন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সভাপতি নিয়াজ মোহাম্মদ খান বিটুর সভাপতিত্বে এতে প্রধান আলোচক ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক আমার দেশের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল হোসেন।
এসময় ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল বলেন, এই দেশে 'মভ কালচার' সৃষ্টি হয়েছে, নতুন করে চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে। এই চাঁদাবাজির কারণে ছাত্রদের একটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি বাদে সারাদেশে কমিটি বিলুপ্ত করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছি, আপনারা অবিলম্বে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝে আপনারা নির্বাচন দিন। যদি নির্বাচিত সরকার না আসে, তাহলে সবকিছু আপনাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। দ্রব্যমূল্য, আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে সব কিছু আপনাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। কারণ, ফ্যাসিস্টরা বিভিন্ন ছদ্মবেশে আপনাদের মধ্যে ঢুকে গেছে এবং এ দেশে আরেকটি অরাজকতা করার পাঁয়তারা করছে। একটি নির্বাচনের জন্য যেটুকু সংস্কারের প্রয়োজন, আপনারা সেটুকু করুন। বাকি সংস্কার যাঁরা জনগণের ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসবে, তারাই করবে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ বলেন, এই জুলাই গণ-অভ্যুত্থান মাত্র ৩৬ দিনের আন্দোলনে ছিল না, এটি ছিল গত ১৫ বছরের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফসল। তিনি বলেন, এই দেশে ১/১১ একটি জরুরি অবস্থায় একটি সরকার হয়েছিল। সেই সরকারটি ছিল ভারতীয়। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসাতে ভারতীয় ষড়যন্ত্রে ১/১১ সংগঠিত হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৮ সালে হয়েছিল একটি কলুষিত নির্বাচন। তখন শেখ হাসিনা বলেছিলেন, মঈন উদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকার ছিল আমাদের আন্দোলনের ফসল। তারপর এই সরকারকে জাতি মেনে নিয়েছিল দেশের গণতান্ত্রিক অবস্থার জন্য। কিন্তু শেখ হাসিনা ক্ষমতায় বসে বিডিআরের ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে তার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে এবং একে একে বাংলাদেশে ফ্যাসিজম কায়েম করে। হাসিনা আমাদের গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করে দিয়েছে, এদেশের সুশাসনকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে এবং বিচারের বাণী নীরবে-নিভৃতে কেঁদেছে। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম, সুপ্রিম কোর্ট 'ল' রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি হাসান জাবেদ, বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মোহাম্মদ শামীম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন, টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আল আমিন শাহীন, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জুনায়েদ হাসান, জেলা হেফাজতে ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আলী আজম, জেলা ইসলামী ঐক্যজোটের সাধারণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন কাসেমী, জেলা খেলাফত মজলিসের সভাপতি হাফেজ এমদাদুল্লাহ সিরাজী, জেলা ইসলামী আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নিয়াজুল করিম ও শহীদ মীর মুগ্ধের পিতা মীর মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল প্রমুখ।
আয়োজিত অনুষ্ঠানে দোয়া পরিচালনা করেন জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মুবারকউল্লাহ। শেষে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ৯ শহীদ পরিবারের হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।
সর্বশেষ খবর