• ঢাকা
  • ঢাকা, সোমবার, ০৪ আগস্ট, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১৫ মিনিট পূর্বে
সোহেল রানা
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৪ আগস্ট, ২০২৫, ০৩:৫৩ দুপুর

শাহজাদপুরে সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগ নেতা শুকুর আলীকে ধরছে না পুলিশ, অভিযোগ আর্থিক সুবিধার

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় জনতা ব্যাংকে হামলাকারী এবং ডাকাতি ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি হাজী শুকুর আলী ও তার সন্ত্রাসী ভাতিজারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারীদের দাবি, জেলা বিএনপির এক নেতার তদবির এবং আর্থিক সুবিধার কারণে শাহজাদপুর থানা পুলিশ এই আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের ধরছে না।

জানা যায়, শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের আলোকদিয়া গ্রামের মৃত আব্দুস সোবহান প্রামাণিকের ছেলে ও ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ শুকুর আলী প্রামাণিক। পূর্ববর্তী সরকার আমলে তিনি বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন করেছেন। বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগের সাবেক এমপিদের সঙ্গে সখ্যতা থাকায় কেউ ভয়ে মুখ খুলতে পারেননি। ৫ আগস্টের আগেও ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শুকুর আলী ও তার ছেলে-স্বজনরা প্রকাশ্যে মিছিল-মিটিংয়ে অংশ নিয়েছেন।

বিএনপির একজন নেতার আত্মীয় হওয়ার সুবাদে ৫ আগস্টের পরও তার দাপট কমেনি। সম্প্রতি একই এলাকার আমির হামজা নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৯৬ লাখ টাকা ধার নেন শুকুর আলী এবং একটি চেক প্রদান করেন। কিন্তু টাকা পরিশোধ না করায় ওই ব্যবসায়ী শাহজাদপুর জনতা ব্যাংকে শুকুর আলীর দেওয়া চেকটি জমা দেন। শুকুর আলীর অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকায় ব্যাংক তাকে ১০ দিনের সময় দিয়ে নোটিশ দেয়। কিন্তু শুকুর আলী ব্যাংকে টাকা জমা না দিয়ে উল্টো চেক হারিয়েছে বলে থানায় ও কোর্টে মামলা করেন।

১০ দিনের সময় পেরিয়ে গেলে আমির হামজা গত ২০ জুলাই বিকেল ৪টায় জনতা ব্যাংক বাঘাবাড়ী শাখায় টাকা উত্তোলনের জন্য গেলে ব্যাংক টাকা নেই জানিয়ে চেক ডিজঅনার কার্যক্রম শেষ করা মাত্রই শুকুর আলী, তার ভাই মফিজ উদ্দিন, মফিজ উদ্দিনের দুই ছেলে সেলিম রেজা ও শিহাবসহ ৪-৫ জন ব্যাংকে হামলা চালান। তারা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার হাবিবুরের কাছ থেকে চেক ও ডিজঅনার স্লিপ ছিনিয়ে নিয়ে টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেলেন।

এ সময় ব্যবসায়ী আমির হামজা, তার ভাই ও দুই ছেলেকে মারধর করা হয় এবং ব্যাংকের আসবাবপত্র ও ল্যাপটপসহ প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন করা হয়। এ ঘটনায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা করতে গেলে শাহজাদপুর থানার ওসি আসলাম আলী আওয়ামী লীগ-ঘনিষ্ঠ শুকুর আলীর পক্ষ নিয়ে তালবাহানা করে মামলা নিতে অস্বীকার করেন। পরে ব্যাংক ম্যানেজার কোর্টে মামলা করলে কোর্ট থানাকে মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেয়। পরবর্তীতে থানায় মামলা রেকর্ড হলেও পুলিশ আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী শুকুর আলীসহ অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তার করছে না।

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মামলায় উল্লেখ করেছে, শুকুর আলী, তার ভাই মফিজ উদ্দিন, শুকুরের ভাতিজা সেলিম রেজা ও শিহাব উদ্দিন সন্ত্রাসী, মাস্তান, চাঁদাবাজ, খুনি, চোর ও ডাকাত প্রকৃতির লোক। তাদের অসাধ্য কোনো কাজ নেই। ঘটনার দিন ব্যাংক অফিসার হাবিবুর রহমান চেক ডিজঅনার কার্যক্রম শেষ করা মাত্রই আসামিরা ব্যাংকে অনধিকার প্রবেশ করে এবং শুকুরের ভাতিজা সেলিম রেজা অফিসারের কাছ থেকে চেক ও ডিজঅনার স্লিপ ছিনিয়ে ও ডাকাতি করে নিয়ে ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে পকেটে ভরে নেয়। এ সময় আমির হামজাসহ তার ছেলেরা প্রতিবাদ করার চেষ্টা করলে সেলিম রেজা ও শিহাবসহ অন্যান্য আসামিরা আমির হামজাকে মারধর করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। একই সময়ে আসামিরা ব্যাংকের ২টি কম্পিউটার, ২টি মনিটর, ৪-৫টি চেয়ার ও কেসি গেটের শিকল ভাঙচুর করে আনুমানিক দেড় লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে। এছাড়াও শুকুর আলীর প্রায় ৫০-৬০ জন সন্ত্রাসী রামদা, হাসুয়া, ফালা, লাঠি ইত্যাদি মারাত্মক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ব্যাংকে ঢোকার চেষ্টা করলে ব্যাংকের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়াও একই সময়ে ব্যবসায়ী আমির হামজাকে হাতুড়ি দিয়ে পা ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়।

আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী শুকুর আলীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা হলেও শাহজাদপুর থানা পুলিশ শুকুর আলী, তার ভাই ও ভাতিজাদের গ্রেপ্তার করছে না। অন্যদিকে, শাহজাদপুর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী শুকুর আলীর পক্ষ নিয়ে মিথ্যা মামলা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মামলায় সন্ত্রাসী শুকুর উল্লেখ করেছেন, বিকেল ৪টার দিকে ব্যাংকের সামনে আমির হামজা ও তার স্বজনরা তাদের মারধর করেছে। অথচ একই সময়ে শুকুর আলী ও ভাই এবং ভাতিজারা ব্যাংকে হামলা চালিয়েছে। পুলিশ কোনো তদন্ত ছাড়াই আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী শুকুর আলীর পক্ষ নিয়ে মামলা রেকর্ড করেছে বলেও অভিযোগ ওঠেছে।

এ বিষয়ে আমির হামজার ছেলেরা জানান, সেদিন ব্যাংকের বাইরে ৪টার সময় তাদের সঙ্গে কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি। বরং শুকুর আলী, তার ভাই ও ভাতিজারা ৪টার সময় ব্যাংকে ঢুকে হামলা চালিয়ে চেক ও ডিজঅনার স্লিপ ছিঁড়ে ফেলে এবং তাদের মারধর করে প্রায় ২ ঘণ্টা আটকে রাখে। পুলিশও তাদের আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী শুকুর বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা করতে পারেনি। পরে স্থানীয় জনতা ও মিল্কভিটাসহ অন্যান্য শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। কিন্তু পুলিশ কোনো তদন্ত ছাড়াই তাদের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করছে। সত্য ঘটনা নিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এবং তারা বাদী হয়ে মামলা করলেও পুলিশ আসামিদের ধরছে না।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর জানান, মামলা নিয়ে কোনো গাফিলতির সুযোগ নেই। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। আজও বাঘাবাড়ীতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। কিন্তু আসামিরা পলাতক রয়েছে। ওইদিন তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী শুকুর আলীর পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, শুকুর আলীর মামলার ঘটনার সময় উল্লেখের বিষয়টি কোনো ব্যাপার না। শুকুর আলীরা মার খেয়েছে এবং হাসপাতালের সার্টিফিকেট আছে এটাই বড় বিষয়। ব্যাংকে হামলা চালাতে গিয়ে ডাকাতরা মার খেয়েছে – তারা কীভাবে মামলা করেন এমন প্রশ্নে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]