
চট্টগ্রাম ক্লাবের একটি কক্ষে সাবেক সেনাপ্রধান অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল এম হারুন উর রশীদকে (৭৫) মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।স্বজনরা মনে করছেন, স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে তার।
সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম ক্লাবের একটি কক্ষে তার মরদেহ পাওয়া যায়।
এম হারুন উর রশীদের বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায়। তবে তিনি ঢাকায় বসবাস করেন।
হারুনের ফুফাতো বোন মেরিন সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. নাজিবুর নাহার সেখানে সাংবাদিকদের বলেন, হারুন-অর-রশীদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে স্ট্রোক করে মৃত্যু হয়েছে। স্বাভাবিক ঘুমানোর মতো অবস্থায় দেখতে পেয়েছি। গতকাল রোববার রাত ৮টায় সর্বশেষ পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছিল।
হারুনের মরদেহ চট্টগ্রামের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) নিয়ে যাওয়া হয়েছে জানিয়ে নাজিবুর নাহার বলেন, সেনাবাহিনীর কর্মকর্তার মাধ্যমে জানতে পেরেছি, হারুন-অর-রশীদ চোখ সন্ধানীতে দান করার অঙ্গীকার করেছেন।
তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনীর আনুষ্ঠানিকতা শেষে আমাদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। হাটহাজারী উপজেলায় পারিবারিক কবরস্থানে হারুন-অর-রশীদকে দাফন করা হবে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) দক্ষিণ জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. আলমগীর হোসেন জানান, রাতে তিনি একটি বিয়ের দাওয়াতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এরপর ক্লাবের ৩০৮ রুমে রাত্রিযাপন করেছিলেন তিনি। সকালে তার একটা মিটিং ছিল। তার মোবাইলে বার বার কল দেওয়া হলেও তিনি রেসপন্স করছিলেন না। এরপর দরজায় নক করা হলেও কোনো সাড়া শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরবর্তীতে বারান্দায় গ্লাসের দরজা ভেঙে বিছানায় তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
তিনি বলেন, আপাতত তার মরদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। বর্তমানে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তা, ক্রাইম সিন ইউনিটসহ বিভিন্ন সংস্থার লোকজন উপস্থিত রয়েছেন। পরিবারের অনুমতি সাপেক্ষে মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হবে। এরপর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
সাবেক সেনাপ্রধানের নিকটাত্মীয় এনাম আহমেদ বলেন, ‘আজ উনার একটি মামলায় আদালতো হাজিরার কথা ছিল। সেজন্যই মূলত তিনি ঢাকা থেকে এসেছিলেন। চট্টগ্রাম ক্লাবের ভিআইপি রুমে একাই ছিলেন। সম্ভবত স্ট্রোক করে মারা গেছেন।’
এম হারুন উর রশীদের বয়স প্রায় ৭৫ বছর। তিনি বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ২০০০ সালের ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২০০২ সালের ১৬ জুন পর্যন্ত তিনি দেশের দশম সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০২ সালের জুনে অবসরে যাওয়ার পর সরকার তাকে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ফিজির রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বও দিয়েছিল।
অবসরে যাবার পর হারুন উর রশীদ ডেসটিনির সঙ্গে ব্যবসায় যুক্ত হন। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। তিনি সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেলও খাটেন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর