
মৌলভীবাজার হাকালুকি হাওরে অবৈধভাবে বেড় জাল দিয়ে মাছ ধরার সুযোগ করে দিতে 'প্রশাসনকে ম্যানেজ' করার নামে মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে ২ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা চাঁদা তুলেন বিএনপির এক নেতা। বিষয়টি ভুয়া বুঝতে পেরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন মৎস্যজীবীরা। এ ঘটনায় বাদী হয়ে মঙ্গলবার উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ওই নেতাসহ দুইজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন, উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের বাছিরপুর গ্রামের মো. নানো মিয়ার পুত্র মো. হেলাল মিয়া ও কালনীগড় গ্রামের মৃত কদম আলীর পুত্র খান জামালসহ অজ্ঞাত আরও ২/৩জন।
পশ্চিমজুড়ী ইউনিয়ন বিএনপির একাধিক নেতা জানান, হেলাল পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন কৃষকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদ্য হওয়া ওই ইউনিয়ন বিএনপির কাউন্সিলে সাংগঠনিক সম্পাদক পদের পরাজিত প্রার্থী।
গত মঙ্গলবার বেড়জাল মালিক মো. হাফিজুল, নজরুল ইসলাম ও ফারুক মিয়াসহ ১৩ জন মৎস্যজীবী উপজেলা মৎস্য অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এ অভিযোগ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের অন্তর্গত হাকালুকি হাওরে স্থানীয় অনেক মৎস্যজীবী অবৈধ বেড়জাল দিয়ে বিভিন্ন সময় মৎস্য সংগ্রহ করেন। জুড়ী উপজেলা প্রশাসন হাওরে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চালিয়ে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। অভিযুক্ত হেলাল সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা মৎস্য অফিসার কে মেনেজ করে মৎস্য স্বীকার করার ব্যবস্থা করে দিবেন বলে ১৫ জন মৎস্যজীবীর কাছ থেকে জামাল এবং সেলিম নামের দুজনের মাধ্যমে ২ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা চাঁদা তুলেন।
মামলা হওয়ার পর হেলাল উদ্দিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভিডিও বার্তা দিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগটি অস্বীকার করে বলেন, আমি রাজনীতির প্রতিহিংসার শিকার। আমি এ বিষয়ে মানহানির মামলা করব। মৎস্য কর্মকর্তা ঘুষ খেয়েছে, না খায়নি তা আমি কিভাবে জানব। মৎস্য অফিসারের সাথে আমার কোন চলাফেরা নেই। মৎস্য অফিসার কোন ঘাটের পানি খায়, কার সাথে চলাফেরা করে এগুলো সব তথ্য আপনারা পাবেন। এবিষয়ে তিনি উপজেলা বাসীর কাছে ন্যায় বিচার দাবি করেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান (বুধবার) জানান, মৎস্যজীবীদের এই অভিযোগ পাওয়ার পূর্বেই আমরা ঘটনাটি জানতে পারি এবং হেলাল মিয়া এবং খান জামালের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২/৩ জনকে আসামী করে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোরশেদুল হক ভূঁইয়া জানান, মামলাটি নথিভূক্ত করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি এবং আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর