
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ত্রাণের জন্য অপেক্ষমাণ মানুষের ভিড়ের ওপর উল্টে পড়েছে একটি ত্রাণবাহী ট্রাক। এতে অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও অনেকে। ঘটনাটি ঘটেছে স্থানীয় সময় বুধবার। ইসরায়েলি সেনাদের চাপের মুখে ট্রাকটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় চলতে বাধ্য হলে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ‘ওয়াফা’। তবে ঘটনাস্থলের নির্দিষ্ট স্থান এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে ওয়াফার বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
একই দিনে ইসরায়েলি বাহিনীর বিভিন্ন স্থানে হামলায় আরও অন্তত ২৪ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।
দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরের পশ্চিমাংশে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে অপেক্ষমাণ অবস্থায় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে পাঁচ জন নিহত হন। মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলায় একই পরিবারের পাঁচ সদস্য নিহত ও ২০ জন আহত হন।
এছাড়া গাজা শহরের একটি ত্রাণশিবিরে ড্রোন হামলায় ছয় মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। একই শহরের দুটি বাড়িতে হামলায় নিহত হয়েছেন আরও আটজন, যাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।
মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকায় একটি আশ্রয়শিবিরে গুলিবর্ষণে পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৮ বছর ধরে অবরুদ্ধ গাজায় চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়েছে। এতে করে ২৪ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।
গাজা সরকারের তথ্যমতে, ২৭ জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত মাত্র ৮৪৩টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে পেরেছে, যেখানে প্রতিদিন প্রায় ৬ হাজার ট্রাক প্রয়োজন।
ফিলিস্তিনি পরিসংখ্যান বলছে, ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোর আশপাশে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ১,৫৬৮ জন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ১১,২৩০ জন।
গাজার কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে বিশৃঙ্খলা ও দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করছে। তারা ক্ষুধার্ত মানুষকে নিরাপত্তাহীন ও বোমাবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তায় ত্রাণ নিতে বাধ্য করছে, যা ‘ক্ষুধার্তদের জন্য মৃত্যুকূপে’ পরিণত হয়েছে বলে দাবি অনেকের।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজায় যে সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে, তাতে এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৬১ হাজার ১০০ জনেরও বেশি মানুষ। অব্যাহত বিমান ও স্থল হামলায় গাজার বড় অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, আর লাখো মানুষ দুর্ভিক্ষ ও মানবিক বিপর্যয়ের মুখে দিন কাটাচ্ছেন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর