
সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছয় হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গতকাল রাতে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ছয়জনের মধ্যে একজনকে র্যাব এবং বাকিদের জিএমপি পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। জিএমপি কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান জানিয়েছেন, দ্রুততম সময়ে আসামিদের সাজা নিশ্চিতে কাজ করবে পুলিশ।
তিনি আরও জানান, সিসিটিভিতে চিহ্নিত সাত আসামির মধ্যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন পাবনার চাটমোহর থানার পাঁচবাড়িয়া এলাকার ফয়সাল হাসান, কুমিল্লার হোমনা থানার কাশিপুর এলাকার শাহ জালাল। এছাড়া সুমন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এক দম্পতিসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে— মোঃ মিজান ওরফে কেটু মিজান, তার স্ত্রী গোলাপি, আল আমিন ও মো. স্বাধীন। এদের তিনজনকেই সিসিটিভির ফুটেজে চিহ্নিত করা গেছে এবং এরা ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদের মধ্যে স্বাধীনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। সকালে র্যাব-১ এর পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার কে এম এ মামুন খান চিশতী সংবাদ সম্মেলনে জানান, আসামি স্বাধীন প্রাথমিকভাবে অপরাধ স্বীকার করেছে।
পরে শনিবার দুপুরে শহরের জিএমপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন জিএমপি কমিশনার ড. মোঃ নাজমুল করিম খান। তিনি বলেন, গোলাপীর হানিট্র্যাপে পড়ে ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে আসা বাদশাহ যখন তার সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়ান, সেই দৃশ্যটি সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন ভিডিও করলে গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা তা দেখে ফেলে। ভিডিও ডিলিট না করলে আসামিরা তুহিনকে কুপিয়ে হত্যা করে।
জিএমপি কমিশনার আরও জানান, পিএম রিপোর্ট পেলেই ১৫ দিনের মধ্যে চার্জশিট দেওয়া হবে। তাদের সর্বোচ্চ বিচার ও দ্রুত সময়ের সাজা নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, সাজার সংস্কৃতি নিশ্চিত করা গেলে অপরাধ দমন করা যাবে। একজন ছাড়া বাকি সব আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আসামিরা আদালতে যদি নাও স্বীকার করে, তবে তাদের এভিডেন্সই তাদের অপরাধ প্রমাণ করবে।
যথার্থ নিরাপত্তা নিশ্চিত না করতে পারার দায় নিয়ে সাংবাদিক কমিউনিটির প্রতি দুঃখ প্রকাশ করেন এবং নিহত আসাদুজ্জামান তুহিনের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান জিএমপি কমিশনার। হঠাৎ ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে গেছে, এমন সাংবাদিকদের প্রশ্নে পুলিশ কমিশনার বলেন, ৫ আগস্টের পর গাজীপুরে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে গেলে অপরাধ বেড়ে যায়। এটা জননিরাপত্তার জন্য হুমকি। তিনি আরও বলেন, ‘আগের রেজিম’ এই জেলায় শক্তিশালী। সেই দলটি গাজীপুরকে অস্থিতিশীল করছে। সেটিও নজরদারি করা হচ্ছে। এই নজরদারি করতে গিয়ে অন্যান্য অপরাধে মনোযোগ নষ্ট হচ্ছে। তবে মানুষের স্বস্তি ফেরাতে কাজ করছে জিএমপি।
সর্বশেষ খবর